অভিজিৎ চৌধুরী , মালদা : দিন-আনা-দিন-খাওয়া জীবনে এটাই ছিল বাস্তব। কিন্তু ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার অভ্যাসটা কখনই ছাড়েননি। তাই হয়ত রাজ্যজুড়ে লটারি-বিতর্কের মাঝেই কোটি টাকার পুরস্কার জিতলেন মালদার ( Malda )  হরিশ্চন্দ্রপুরের পান বিক্রেতা। 

দোকানি থেকে কোটি টাকার মালিক


টিকিট কাটার আধঘণ্টার মধ্যে পান দোকানি থেকে কোটি টাকার মালিক। কোটিপতি। বুধবার বিকেলে পিপলা গ্রামের বাসিন্দা মাত্র ৩০ টাকা দিয়ে লটারির টিকিট কাটেন । পিন্টু সাহা নামে এক ব্যক্তি  ও তাঁর শ্যালক কৃষ্ণ দাস উভয়েই কাটেন টিকিট। ফলাফল বেরোলে দেখা যায়, এক কোটি টাকার পুরস্কার জিতেছেন তাঁরা। লটারির ফল দেখে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ।


 বেড়েছে উদ্বেগ


তবে অর্থ আসতেই বেড়েছে উদ্বেগ। রাতারাতি ভাগ্য বদলে হতবাক ভগ্নিপতি ও শ্যালক নিরাপত্তার কথা ভেবে ছুটে যান হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। পুলিশের তরফে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। 


হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত পিপলা গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু সাহার একটি ছোট পানের দোকান । সেই দোকান থেকেই অতি কষ্টে আসত সংসার খরচ । আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে সংগ্রাম করে দৈনন্দিন জীবন চালাতে হতো। তবে জীবনের লড়াইয়ে কখনো হার মানেনি পিন্টু। সংসার চালাতে সব সময় কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আর তার সেই দৈনন্দিন সংগ্রামে তার পাশে থাকতেন শ্যালক কৃষ্ণ দাস।

কীভাবে খুলল ভাগ্য
রাতারাতি এই ভাবে ভাগ্য বদলে গেল শ্যালক এবং ভগ্নিপতির। সন্ধে বেলা চা খেতে খেতে একটি লটারির দোকান থেকে দুইজনে মিলে তাঁরা টিকিট কাটেন। বিকেল ৫:৫০ মিনিটে তারা টিকিট কাটেন।  লটারির ওই টিকিটের খেলা ছিল সন্ধ্যে ৬ টার সময়। কিছুক্ষণ পরে খেলার ফলাফল দেখতেই আনন্দে আত্মহারা দুই জনেই। সবটাই যেন ছিল তাঁদের কাছে স্বপ্ন।

পুরস্কারের এই অর্থ মূল্য সমান ভাগে ভাগ করে নেবে শ্যালক এবং ভগ্নিপতি। আগেও যে ভাবে তারা এক সঙ্গে থাকতো বর্তমানেও থাকবে। খুশি পরিবারের সকল সদস্যরাই। স্বাভাবিক ভাবে সাধারণ একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে রাতারাতি কোটিপতি হওয়া কোন অসাধ্য সাধনের থেকে কম নয়। ফলাফল আসার সাথে সাথেই সুরক্ষার কথা ভেবে তারা দৌড়ে যান হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। পুরস্কার পাওয়া পর্যন্ত তাদের সুরক্ষার সব দায়িত্ব হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের। টিকিট বিক্রেতা রমেন গুপ্তা জানিয়েছেন, এর আগে প্রথম পুরস্কার অবিকৃত থেকে গেছিল। সেই আফসোস আজ মিটে গেল।


কোটি পতি পান বিক্রেতা পিন্টু সাহা বলেন, পানের দোকান করতাম। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। আমার স্যালক সব সময় আমার পাশে থেকেছে। ভবিষ্যতেও আমরা এই ভাবে থাকবো। সকলকে এক সাথে নিয়ে চলবো।


লটারির টিকিট বিক্রেতা রমেন গুপ্তা বলেন, লটারির টিকিট খেলার মধ্যে কোন দুর্নীতি নেই। এটা ভাগ্যের ব্যাপার যাদের পাওয়ার ঠিক পাবে। মানুষ কিভাবে কাটবে সেটা মানুষের কাছে। টিকিট কাটলে পুরস্কার পাওয়া যাবে সে রকম কোন কথা নেই।