করুণাময় সিংহ, ইংরেজবাজার : শুক্রবার দুপুরে নিথর দেহ পৌঁছে গেল পুরসভায়। এ দিনও তাঁর ঘরের চেয়ার, টেবিল ফাঁকা পড়ে রয়েছে। টেবিলে রয়েছে ২০২৪ সালের ক্যালেন্ডার। নতুন বছরের ক্যালেন্ডার এখনও টেবিলে পড়েনি। দুলাল সরকারের মরদেহ পৌঁছতেই সবার চোখে জল। প্রিয় নেতার ছবি আঁকড়ে পুরসভায় মাথা নিচু করে বসে রইলেন দুলালের সর্বক্ষণের সঙ্গী। এ দিন নেতাকে চা দিতে না পেড়ে চোখে জল মহিলা কর্মীদেরও। দুলালকে পুরসভায় শেষ শ্রদ্ধা জানান দলের নেতা তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পুরসভার শাসক বিরোধী শিবিরের নেতা, নেত্রীরা। এই পুর ভবনের দ্বিতলের কোণের ঘরে বসেই পুরপ্রতিনিধি হয়ে বছরের পর বছর ধরে কাজ করে গেছেন ইংরেজবাজার শহরের এই তৃণমূল নেতা।
দিনের আলোয় ধাওয়া করে তৃণমূলের দাপুটে নেতাকে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। প্রথম গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পরও...দুলাল সরকারের মৃত্যু নিশ্চিত করতে এরপর মাথায় গুলি করে সুপারি কিলাররা! কিন্তু মালদায় তৃণমূল নেতাকে খুনের মোটিফ কী ছিল? খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে বিহারের বাসিন্দা মহম্মদ সামি (২০), আব্দুল গণি (২২) ও ইংরেজবাজারের বাসিন্দা টিঙ্কু ঘোষকে (২২)। তৃণমূল নেতাকে খুনের পর, মানিকচক হয়ে... বিহারে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল দুষ্কৃতীরা। ১ জন বিহারে পালিয়ে যেতে পারলেও, পালানোর সময়ই ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই তিন জনকে আজ মালদা জেলা আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী আজ স্পষ্টভাবে বিচারককে জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড এখনও গ্রেফতার হয়নি। সেই কারণে এই তিন জনকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হোক যাতে মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজে বের করা হয়। এদিন মালদা বার অ্যাসোসিয়েশনের কোনও আইনজীবী অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল জবাব করেননি। কিন্তু জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্র থেকে এই তিন জনের জন্য জামিনের আবেদন করা হয়। বিচারক সমস্ত বিষয় শোনার পর তাদের জামিনের আবেদন নাকচ করে এবং ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ মনে করছে., দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় একজন মাস্টারমাইন্ড নয়। বেশ কয়েকজন জড়িতে থাকতে পারে। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মালদায় ছিল দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল নেতাকে খুনের আগে রেকি করা হয়, নজর রাখা হয় তাঁর গতিবিধি ওপর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল গ্রেফতার হওয়া ২ ব্য়ক্তি সুপারি কিলার।