করুণাময় সিংহ, মালদা : মালদায় জেলা কমিটি গঠন ঘিরে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের কোন্দল। পদ পাইয়ে দিতে নেপথ্যে টাকার খেলা চলেছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন শাসকদলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সহ সভাপতি। এই নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলার ঘাসফুল শিবির।


মালদায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের কোন্দল। জেলা কমিটি নিয়ে সরব দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। এক সপ্তাহও হয়নি, মালদায় নতুন জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যেই নতুন কমিটি নিয়ে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। অভিযোগ উঠেছে, ছলে-বলে-কৌশলে জেলা কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, পঞ্চায়েতে প্রার্থীপদও টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগ তুলছেন জেলার সংখ্যালঘু সেলের সহ সভাপতি।


মালদা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সহ সভাপতি মহম্মদ আনজারুল হক বলেন, "টাকার বিনিময়ে হচ্ছে। কারণ, কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের লোক কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের ঠিকানা দিয়ে মালদা জেলার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে হয়েছে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান, সভাপতি টাকা না নিলে একটা ব্লকের ঠিকানা পাল্টে দিয়ে কী করে এটা সম্ভব।" 


কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভের কথা অবশ্য মানতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলছেন, "যাঁরা এ ধরনের কথা বলছেন, তাঁরা বিজেপি-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। আমাদের জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস ইউনাইটেড। আমরা সকলে একসঙ্গে আছি।"

জেলা কমিটি গঠন ঘিরে শাসকদলের এই টানাপোড়েনকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, "২০২১ সালে সংখ্যালঘুরা যারা তৃণমূলকে নিজের দল ভেবে সাপোর্ট করে জেলায় এনেছিল, তারাও আজ মুখ ফেরাচ্ছে। দুর্নীতিগ্রস্ত দল, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সংখ্যালঘুরা মেনে নিতে পারছে না।"

জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব কমিটি গঠন নিয়ে দলের একাংশের ক্ষোভকে আমল দিতে না চাইলেও, ভিন্নমত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, "এরা দলের বিরোধিতা করেছেন।পঞ্চায়েতে, লোকসভায়, বিধানসভায় বিরোধিতা করেছেন। নিজের বুথে হেরেছেন সব। তাঁদের যদি পদাধিকার দেয়, তাহলে পার্টির কী হবে ? কলকাতার যে নেতারা আছেন তাঁরা কমিটির পর্যালোচনা করেননি। ফলে, ক্ষোভ বাড়ছে।"

পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের ফাটল সামলাতে বিভিন্ন জেলার কমিটিতে একাধিক রদবদল ঘটিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এই সিদ্ধান্ত ভোটের ফলে কতটা প্রভাব ফেলে, সেটাই দেখার।