করুণাময় সিংহ, মালদা:  মালদার মানিকচকের ভূতনির চরে ফের গঙ্গায় ভাঙন। গতকাল বিকেল থেকে কেশোরপুর কালুটনটোলা এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। তলিয়ে গিয়েছে নদী তীরবর্তী কৃষি জমি, বড় বড় গাছ। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা গঙ্গাগর্ভে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। ভাঙন রুখতে কী পদক্ষেপ, তা নিয়ে প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।



এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনের তরফে বালির বস্তা ফেলা হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। আজ সেচ প্রতিমন্ত্রী ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে ক্ষোভের কথা শুনতে হয়। মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, স্থায়ী বাঁধের বিষয়টি দেখা হবে।


কী ঘটছে সেখানে? 


ভাঙন ক্রমেই এগিয়ে আসছে জনপদের দিকে। পাড়ে বড় বড় ফাটল। ধসে যাচ্ছে পাড়ের মাটি। এই অবস্থায় বালির বস্তা ফেলে কোনওরকমে ঠেকানোর চেষ্টা চলছে আগ্রাসী গঙ্গাকে। গঙ্গার ভাঙনে এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি মালদার ভূতনির চরের। বিপন্ন এখানে বসবাসকারী বহু পরিবার। শুক্রবার ভাঙন- পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের কথা শুনলেন 
রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। 


আরও পড়ুন, 'অমিত শাহকে বাগদায় এসে ক্ষমা চাইতে হবে', বিএসএফকাণ্ডে দাবি তৃণমূলের


মন্ত্রীকে সামনে পেয়ে গ্রামবাসীরা জানান, বালির বস্তা দিয়ে কিছু হবে না। স্থায়ী বাঁধ তৈরি করতে হবে। তাঁরা বলেন, বালির বস্তা ফেলে কাজ হচ্ছে।  প্রতি বছর বন্যার সময় এভাবে কোটি কোটি চাকার কাজ হয়, কিন্তু লাভ কিচু হয় না।  এইরকম চলতে তাকলে ভূতনি এলাকা নিষ্চিহ্ন হয়ে যাবে  আমরা চাই স্থায়ী বাঁধ তৈরি হোক। আরেক বাসিন্দা বলেন, প্রতিবছর মাত্র দু চারজন ঠিকাদার ঘুরে পিরে কাজ পায় ভাঙন রোদে কাজের কাজ কিছুই হয় না। সব টাকা লুঠ হয়।


মালদার ভাঙন ফি বছরের ঘটনা। তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও নতুন কিছু নয়। সেচ প্রতিমন্ত্রী  সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, "এলাকার মানুষ সমস্যায় আচেন। তাদের দুঃখের কতা আমাকে জানিয়েচেন। আমরা আমাদের সাধ্যমতো কাজ করার চেষ্টা করছি।  বর্ষার  পর যাতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা যায়, সেই চেষ্টা করব।" 


বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌর মণ্ডল বলেন, "আমি ওই এলাকারই বাসিন্দা, প্রতি বছর যে টাকা বরাদ্দা হয়, তার ৪০ শতাংশ কাজ হয় না।  তৃণমূলের ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত সমস্ত নেতারা সেই টাকা লুঠ করে খায়। ভাঙন রোধের কাজের দাবিতে আমরা দালতে যাওয়ার চেষ্টা করছি।" 


ফুলহার ও গঙ্গা, দুই নদী দিয়ে ঘেরা ভূতনির চর। বালির বস্তা দিয়ে সাময়িক বিপদ রোখা গেলেও পরে কী হবে, সেই চিন্তা গ্রামবাসীদের। স্থায়ী বাঁধ কবে হবে, সে দিকেই তাকিয়ে ভূতনির চরের বাসিন্দারা।