করুণাময় সিংহ, মালদা:সাপের কামড় (Snake Bite), রোগীমৃত্যু (death) ও কুসংস্কার (superstition)! মালদার (Malda) একটি ঘটনা দেখিয়ে দিল, চিকিৎসার (treatment) বিষয়ে এখনও কতটা অন্ধকারে রাজ্যের বহু মানুষ। এদিনের ঘটনার কেন্দ্রে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। সাপের কামড়ে মৃত এক ব্যক্তিকে সেখান থেকে জোর করে বাড়ি নিয়ে গিয়ে ওঝাকে (Ojha) তলব করেন আত্মীয়রা। পরে পুলিশ (police) গিয়ে দেহ ফিরিয়ে আনে।


কী ঘটেছিল?
পুলিশ সূত্রে খবর,সাপের কামড়ে মৃত ওই ব্যক্তির নাম রবি। আত্মীয়রা সাত সকালে তাঁর দেহ হাসপাতাল থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেন মালদা মেডিকেলের কর্মীরা। একপ্রস্ত ধুন্ধুমার হয় সেই সময়, হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি। শোনা যাচ্ছে, মান্ধাতার আমলের বিশ্বাস থেকেই মৃত যুবকের 'চিকিৎসার'জন্য ওঝা তলব করা হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ রবির বাড়ি পৌঁছয়। পরে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয় দেহটি। এদিনের অশান্তির প্রেক্ষিতে মালদা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, যাঁরা এই কাজ ঘটিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সাপের কামড়ে মৃতের জন্য ওঝা তলবের এই প্রবণতা বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। শুধু মালদা নয়, রাজ্যের নানা প্রান্তে আজও মাঝেমধ্যেই চিকিৎসাকেন্দ্রের পরিবর্তে এই ধরনের রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার খবর শোনা যায়। আর এখানে তো মৃত্যুর পরও ওঝার উপর আস্থা রাখার ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসের গোড়াতেও উত্তর চব্বিশ পরগণায় এক সাপে কাটা রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে আসা হয়েছিল। 


আগেও মৃত্যু সাপের কামড়ে...
সাপের কামড়ের রোগীকে আগে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে ওঝা ঝাড়ফুঁক করায় সময় নষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালী থানার খুলনা গ্রামের মৃধা পাড়ায়। মৃতের নাম স্বপন মৃধা। ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যায় খুলনা গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মৃধা স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পর হাত পা ধুতে পুকুরে যাওয়ার সময় পুকুর পাড়ে একটি বিষাক্ত কেউটে সাপ তাঁর পায়ে ছোবল দেয়। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে ওঠেন স্বপন। তারপর বাড়িতে বলে নিজে নিজে স্থানীয় এক ওঝার কাছে যান। সেখানে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঝাড়ফুঁক করার পর অবস্থা বেগতিক বুঝে ওঝা হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলেন। তত ক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। স্বপনের সারা শরীর বিষের জ্বালায় জ্বলছে। হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু সেখানে নিয়ে আসার পথেই মারা যান তিনি।


আরও পড়ুন:'ববির প্রমোশন হয়নি', আচমকা কী নিয়ে বললেন দিলীপ ঘোষ ?