করুণাময় সিংহ, মালদা: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি (anganwadi recruitment) দেওয়ার নামে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল মালদার (Malda) মালতিপুরের তৃণমূল (TMC) বিধায়কের বিরুদ্ধে। যদিও টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা (political tussle)। 


তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ


অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া। চাকরি প্রার্থীদের ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়া। স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যখন তোলপাড় চলছে, তখন মালদার মালতিপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির বিরুদ্ধে উঠল প্রতারণার এমনই অভিযোগ। 


তৃণমূল বিধায়কের পাশাপাশি তিনি জেলা তৃণমূলের সভাপদি পদেও রয়েছেন। গাজোলের উত্তর আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা ফারিদা খাতুনের অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরির জন্য আড়াই বছর আগে মালতিপুরের তৃণমূল বিধায়ককে আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। সেইসময় আব্দুর রহিম বক্সি RSP-র নেতা ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ৫ জন মহিলার কাছ থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি দেওয়ার নামে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 


অভিযোগকারিণী ফারিদা খাতুনের কথায়, 'লতিফুন বিবি নামে রানিগঞ্জ ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্যের মাধ্যমে রহিম বক্সির সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আড়াই বছর আগে আইসিডিএসের চাকরির জন্য আড়াই লক্ষ টাকা দিই, কিন্তু সেই চাকরি হয়নি। বারবার টাকা ফেরত চাওয়া হলেও ফেরত মেলেনি টাকা।' 


যাঁর মাধ্যমে ফারিদা টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করছেন, সেই তৃণমূল নেত্রী লতিফুন বিবিও সে কথা স্বীকার করছেন। রানিগঞ্জ ১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেত্রী ও প্রাক্তন সদস্য লতিফুন বিবির কথায়, 'রাজনীতি করার সুবাদে রহিম বক্সির সঙ্গে পরিচয় আছে। ৫ জন মহিলার কাছ থেকে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা তুলে রহিম বক্সির হাতে দিই। তাদের একটি নিয়োগপত্র দেওয়া হয়, কিন্তু পরবর্তী সময়ে জানতে পারি যে সেই নিয়োগপত্র ভুয়ো।'


এই ঘটনায় ১৪ জুন মালদার জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ৫ জন চাকরিপ্রার্থী। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। মালতিপুরের অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির দাবি, 'ভিত্তিহীন অভিযোগ সব। যারা অভিযোগ করেছে তাদের কাউকে তিনি চিনি না, ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।'


আরও পড়ুন: Murshidabad: বাড়ি থেকে প্রাথমিকের পার্শ্বশিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান


গোটা ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক তরজা


চাকরির নামে ‘প্রতারণা’ তৃণমূল বিধায়কের। বিজেপির কটাক্ষ, পাল্টা তৃণমূল। দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, 'আগে বামফ্রন্টের মন্ত্রীদের নামে টাকা তুলতেন এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে টাকা তুলছেন। তফাৎ কিছু হয়নি। আগেও টাকা তুলতেন এখনও টাকা তুলছেন।'


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর কথায়, 'ওখানে লেখা নেই যে তিনি পার্টির নামে টাকা তুলেছেন। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ হয়েছে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। জেলাশাসক পার্টিকে জানালে তারপর পার্টি হস্তক্ষেপ করবে।'


এবিষয়ে মালদার জেলাশাসক জানিয়েছেন, প্রতারণার যে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।