অভিজিৎ চৌধুরী ও করুণাময় সিংহ, মালদা: হোটেলের (hotel) ডেলিভারি বয় (delivery boy) নাকি ডাক্তার (doctor)? বীরভূমের (birbhum) নলহাটির এক বাসিন্দার 'কীর্তিতে' হইচই মালদায়। অভিযোগ, ভুয়ো (fake) নামে এমবিবিএস ডাক্তারের পরিচয় দিয়ে দস্তুরমতো প্রাইভেট চেম্বার (private chamber) চালাচ্ছিলেন ওই যুবক। তাঁর প্রতারণার কোপে পড়েছেন মালদার অসংখ্য রোগী ও তাঁদের পরিবার, এমনও শোনা যাচ্ছিল। সোমবার দুপুরে সেই যুবককেই গ্রেফতার (arrest) করল মালদা গোয়েন্দা দফতর এবং সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হতেই মালদা শহর জুড়ে ব্যাপক শোরগোল! শহরের প্রাণকেন্দ্র এবং ডাক্তার পাড়া হিসেবে পরিচিত রয়েছে সিঙ্গাতলা রোড এলাকায় কী ভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছিলেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায় নামে ওই যুবক? যদিও গোয়েন্দাদের দাবি, নামটিও ভুয়ো।


কী জানা গেল?
পুলিশ জানিয়েছে,  যুবকের আসল নাম দেব বর্মন। গত দু'মাস ধরে ৫০০ টাকা ভিজিটের বিনিময়ে একটি ওষুধের শোরুমের পাশেই চেম্বার খুলে 'রোগী দেখার' ব্যবসা চালু করেছিলেন তিনি। বিষয়টি জানতে পারে গোয়েন্দা দফতর এবং সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। এরপরই অভিযান চালিয়ে ওই ডাক্তারকে হাতেনাতে ধরা হয়। চোখের সামনে 'প্রতারণার' অভিযোগে ওই যুবক ধরা পড়ায় হাজির রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা হতভম্ব হয়ে যান। আদতে পেশায় 'ডেলিভারি বয়'-র দেব বর্মনের  প্রেসক্রিপশনেরই ওষুধ খেয়েছেন তাঁরা। ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে। পুলিশ জানতে পেরেছিল, যাঁর নামে ওই যুবক ডাক্তারি করতেন তিনি আসলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের নিউরো বিশেষজ্ঞ। সেই আসল শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম বিষয়টি জানতে পারেন। তিনিই  গোয়েন্দা দপ্তর এবং সাইবার ক্রাইম থানায় পুলিশকে অভিযোগে জানান।


আর যা...
যে ওষুধের চেম্বারের সহযোগিতা নিয়ে এই ভুয়ো ডাক্তার প্রাইভেট প্র্যাকটিস চেম্বার খুলে ছিলেন সেই ওষুধের চেম্বারের বিরুদ্ধেও বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট চেম্বরারে কর্ণধার দেবাশিস সেন বলেন, 'আমার এখানে মাঝেমধ্যেই অনেক নামজাদা ডাক্তার নিজেদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য ভাড়া নিয়ে থাকেন। কোনA এক রিপ্রেজেন্টেটিভের মাধ্যমেই এই ডাক্তারের সন্ধান পেয়েছিলাম।...কিন্তু এর পিছনে এত বড় কান্ড জড়িত রয়েছে, আমরা ভাবতেই পারিনি।' এদিন রোগীর সঙ্গে আসা দুই আত্মীয় ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী , শিল্পী গুহ বিশ্বাসদের বক্তব্য, 'ওই ব্যক্তি ৫০০ টাকা ভিজিট নিতেন। দীর্ঘদিন ধরে ছেলেকেদেখাচ্ছি। ওষুধও দিয়েছে, কিন্তু কোনও কিছু টেস্ট করতে দিত না। আমরা অনেকবার ডাক্তারকে বলেছিলাম শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। কিন্তু শুধু ওষুধই লিখে দিতেন।' ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাইবার ক্রাইম থানায় এবং গোয়েন্দা দফতরের পক্ষ থেকে মালদা আদালতে আবেদন করার কথা জানানো হয়েছে।


আরও পড়ুন:এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৎপর সিবিআই, ২০ জন চাকরিপ্রার্থী,চাকরি প্রাপককে তলব