কলকাতা: সেনায় নিযুক্তির ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছেই। এ বার তা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর অভিযোগ, ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প (Agnipath Scheme) সেনার চাকরিই নয়। গোটাটাই কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) সরকারের মস্তিষ্কপ্রসূত একটি প্রকল্প, যার মাধ্যমে  ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024)  আগে ক্যাডার তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।  এই প্রকল্পে দেশের সেনাবাহিনীকে অপমান করা হচ্ছে বলে মত তাঁর। 


‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের


সোমবার রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal Assembly) একাদিক ইস্যুতে ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের কথা উঠে আসে তাঁর মুখে। তিনি বলেন, ‘‘অগ্নিপথ প্রকল্পে চার বছরের যে চাকরি, তা সেনার চাকরি নয়। এটি সেনাবাহিনীর তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়নি, ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে। চার বছরের চাকরির নামে ২০২৪-এর গে ক্যাডার তৈরি করতে চাইছে বিজেপি।’’


ঘোষণা পর্ব থেকেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প এবং ‘অগ্নিবীর’দের ভবিষ্যৎ নিয়ে লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশ জুডে় তীব্র বিক্ষোভ, আন্দোলন চলছে তা নিয়ে। সোমবার দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে ভারত বন্‌ধও। সেই আবহেই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘চার বছরের চাকরি চলে গেলে কী হবে, কেউ জানে না। অথচ সবাই বন্দুক চালানোর লাইসেন্স পেয়ে গেল! সারা দেশে আগুন নিয়ে এইভাবে খেলা হচ্ছে।’’ এটা সেনাবাহিনীর অপমান বলেও মন্তব্য করেন মমতা।  



আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee in Tripura: বিজেপি নেতার ছেলে BCCI সচিব হবেন, আর ‘অগ্নিবীর’রা দারোয়ান! কটাক্ষ অভিষেকেরও


এ দিন বিধানসভায় শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও মুখ খোলেন মমতা। নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করেন তিনি। মমতার কথায়, ১ লক্ষ চাকরি হয়ে থাকলে, ১০০টা ভুল অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেই ভুল সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে। শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে ‘দাদামণি’ বলেও উল্লেখ করেন মমতা।  মমতা জানান, ‘দাদামণি’রা ১৭ হাজার চাকরি চলে যাবে বলে দাবি করছেন। ‘দাদামণি’ নিজে যাঁদের চাকরি দিয়েছিলেন, সেই মানুষগুলির কী হবে, প্রশ্ন তোলেন মমতা। মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর, পুরুলিয়ার মতো জেলায় ‘দাদামণি’রা প্রচুর চাকরি দিয়েছেন, তাঁরা কি এ বার বিজেপি নেতাদের বাড়িতে গিয়ে ধর্নায় বসবেন, সেই প্রশ্ন তোলেন। ‘দাদামণি’ সরকারে থাকাকালীন চাকরি দিয়েছিলেন, এখন চাকরি খেয়ে নেওয়ার কথা বলছেন বলেও মন্তব্য করেন।  তিনি চাকরি দিতে পারেন, কারও চাকরি খেতে পারেন না, তাই নতুন করে নিয়োগের নির্দেশের দিয়েছেন বলেও বিধানসভায় জানান মমতা। 


নাম না করে শুভেন্দুকে নিশানা মমতার


উল্লেখ্য,  এর পরই মমতার ভাষণ চলাকালীন শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপি নেতারা বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। ‘ঘুষখোর সরকার, আর নেই দরকার’ ধ্বনি দিতে দিতে বেরিয়ে আসেন সকলে। ২০ জুন দিনটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করার ব্যানার নিয়ে রেড রোড ধরে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তির উদ্দেশে রওনা দেন।