কলকাতা: রসে-বশে থাকেন বলে রাজনীতিতে 'বদনাম' রয়েছে তাঁর। আগের মতো দলে গুরুত্ব নেই বলেও শানা যায় প্রায়শই। কিন্তু মদন মিত্র (Madan Mitra) যে এখনও মমতার স্নেহধন্য, আবারও তার প্রমাণ মিলল। কারণ মন্ত্রিসভার বৈঠকে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদনের খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুধু তাই নয়, মদনের মুখে বিখ্যাত হওয়া 'ওহ্ লাভলি' শব্দবন্ধও শোনা গেল তাঁর মুখে। (Oh Lovely)
পায়ে চোট লাগার দরুণ এই মুহূর্তে গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন মমতা। সেই অবস্থায় বৃহস্পতিবার কালীঘাটের বাড়িতেই মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই বৈঠকে যোগ দেন মদনও। স্ক্রিনে মদনকে দেখে যারপরনাই খুশি হন মমতা। হাসিমুখে খবর নেন দীর্ঘদীনের সতীর্থের। মদনকে হাসিখুশি থাকার পরামর্শও দেন।
ওই বৈঠক থেকে যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে মদনের সঙ্গে কথা বলতে শোনা গিয়েছে মমতাকে। তিনি বলেন, "মদন মিত্র বসে আছে দেখছি। বেশ কালারফুল দেখাচ্ছে। জামাটা খুব সুন্দর তো! আবার বলো দেখি, ওহ্ লাভলি! ও তো লাভলি বলবেই। ওহ্ লাভলি তো তোমার ব্র্যান্ড হয়ে গিয়েছে! কামারহাটির পুজোটা দেখো। রঙিন জামা পরবে। ভাল করে পুজো কাটাবে কিন্তু। অলওয়েজ বি কালারফুল অ্যান্ড চিয়ারফুল"।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: রাজ্য পুলিশে ১২ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ, কালীঘাটে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত
রাজনীতির ময়দানে মমতার দীর্ঘদিনের সতীর্থ মদন। মমতা যখন যুব কংগ্রেসের নেত্রী, সেই সময়ও বরাবর তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে থেকেছেন মদন। এমনকি কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে মমতা যখন তৃণমূল গড়েন, বিনা বাক্যব্যয়ে মদন তাঁকে অনুসরণ করেন। একসঙ্গে মাঠে-ময়দানে মিটিং-মিছিলও করেছেন মমতার স্নেহধন্য মদন। বাংলার রাজনীতিতেও মমতার স্নেহধন্য হিসেবেই বরাবর পরিচিত ছিলেন মদন। এমনকি 'রঙিন ছেলে' উপমাও মমতারই দেওয়া।
কিন্তু বিগত কয়েক বছরে গঙ্গার বুক দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। তাতে মমতার ঘনিষ্ঠবৃত্ত থেকে মদন বাদ পড়েছেন, এমন দাবিও উঠে এসেছে বার বার। দলে যে আগের মতো গুরুত্ব নেই তাঁর, ঠারেঠোরে তা বুঝিয়ে দিতে শোনা গিয়েছে মদনকেও। যে রাজনীতি তাঁর জীবন ও যাপনের অঙ্গ, তা থেকে বিদায় নেওয়ার কথাও বলতে শোনা গিয়েছে মদনকে।
এতকিছুর পরও যদিও মমতা সম্পর্কে একটিও বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়নি মদনকে। বরং মমতার প্রতি নিজের আনুগত্য বার বার প্রকাশ করে এসেছেন তিনি। সময়ের সঙ্গে রাজনীতির সমীকরণ বদলালেও, মদন যে আজও তাঁর কাছে ভ্রাতৃসুলভ, আজও তাঁর স্নেহধন্য, এদিন তা ফের বুঝিয়ে দিলেন মমতা।