আশাবুল হোসেন, আলিপুরদুয়ার : ২০১৯’র লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ থেকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল তৃণমূলকে (TMC)। ২১’র বিধানসভা ভোটেও আলিপুরদুয়ার-জলপাইগুড়ি জেলায় বিশেষ দাগ কাটতে পারেনি তারা। এবার বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) দাঁড়িয়ে কেন্দ্রকে লাগাতার আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই সঙ্গে তুলে ধরেন সরকার অলিপুর দুয়ারের উন্নতির জন্য কী কী পদক্ষেপ করেছে ও আগামীদিনে কী কী পরিকল্পনা নিয়েছে। 
বুধবার সকাল থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অন্য মেজাজে। গণবিবাহের মঞ্চে উঠে তিনি নাচ করেন আদিবাসী রমণীদের সঙ্গে। সেই সঙ্গে সকলকে শুভেচ্ছা জানান। পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ,  আদিবাসী ভাইবোনেরা খুব ভাল নাচে, গান গায়। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন বাংলার দুর্গাপুজোকে (Durga Puja) ইউনেস্কো হেরিটেজ স্বীকৃতী দিয়েছে। তিনি বলেন, '' আমার বিশ্বাস আদিবাসী ঘরের মেয়েরা অলিম্পিক্সে সোনা জিতে আসবে। ঝাড়গ্রামে আর্চেরি অ্যাকাডেমি করেছি।''
সেই সঙ্গে তিনি তুলে ধরেন, তাঁর সরকার আদিবাসীদের উন্নতিকল্পে আর কী কী করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান,  কলকাতায় আদিবাসী ভবন তৈরি করা হয়েছে থাকার জন্য। কালম্পিঙে আদিবাসী ভবন তৈরি হয়েছে। বিরসা মুণ্ডার জন্মদিন ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। মাঝি থান, জহর থান তৈরির পথে। 


তিনি মনে করিয়ে দেন, '' চা বাগান শ্রমিকদের আগে মজুরি ছিল ৬৭ টাকা, আমরা ২০২ টাকা করে দিয়েছি। আরও বাড়বে। যতদিন না বাড়ছে ততদিন ১৫ শতাংশ ইন্টেরিম রিলিফ মিলবে। চা সুন্দরীর মাধ্যমে বাড়ি তৈরি করছি।'' 


সরকারের নজর রয়েছে পর্যটন শিল্পেও। সেই কথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হোম ট্যুরিজম তৈরি হবে। বাইরে থেকে ট্যুরিস্ট এলে রোজগার বাড়বে। সরকার ১ লক্ষ টাকা দেবে। আপনাদের রোজগার হবে। 


এদিনের অনুষ্ঠানেও কেন্দ্রকে নিশানা করতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, '' কেন্দ্রীয় সরকার গম বন্ধ করে দিয়েছে। ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। গ্যাসের দাম কোথায় বেড়ে হয়েছে? ভোটের আগে উজ্জ্বলা দিয়েছিল, এখন কোথায়? ভোট আসবে তখন বলবে আলাদা রাজ্য দেব, চা বাগান খুলে দেব। আর ভোটের পর দেখুন জিনিসপত্রের দাম কোথায় পৌঁছেছে! ' 

তিনি আরও বলেন : 


* এখন আদিবাসী, তফশিলি জাতি, উপজাতিদের জন্য কাস্ট সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করেছি। দুয়ারে সরকারে বাকি কাজ হবে। 


* ঝাড়গ্রামে একলব্য স্কুলে দেখাশোনার জন্য দিয়েছিলাম রামকৃষ্ণ মিশনে। অনেকে এর প্রতিবাদ করেছিল। এখন সেখানকার সব পড়ুয়ারা ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে।


* স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড ৫ লক্ষ টাকা করেছি। আমরা চাই বিনামূল্যে চিকিৎসা পান আপনারা। ১০ লক্ষ টাকা ক্রেডিট কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। 


* আদিবাসীর জমি আগে সবাই দখল করে নিত, আমরা একটি আইন তৈরি করেছি আদিবাসীর জমি কেউ নিতে পারবে না। নিলে তা বেআইনি হবে। কোনওভাবেই নেওয়া যাবে না। 


* ৫১০ জোড়া পরিবারকে বিয়ে দিলাম। ১৩ লক্ষ মহিলাকে বিয়ের জন্য রূপশ্রীর মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা করে দিই।


* আপনারা ভাল থাকুন, আকাশের মতো হাসতে থাকুন। আপনারা ভাল থাকলে আমি ভাল থাকব।