কলকাতা: এশহর আগেও বহুবার শাসক ও বিরোধীদলের একইদিনে পৃথক পৃথক কর্মসূচি রাখতে দেখেছে। একুশের বিধানসভার (WB Assembly Election 2021) আগে, রাজ্যে 'বিজেপির রথযাত্রা' যেমন একদিকে দেখেছে রাজ্য। তেমনই তারই পাশাপাশি তৃণমূলের 'দিদির দূত'-র সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়েছে বঙ্গবাসীর। শহর কলকাতায় তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসেও গেরুয়া শিবিরের সভা ঘিরে কম জলঘোলা হয়নি। আর এবার, লোকসভা ভোটের আগে (Lok Sabha Election 2024) অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন, মমতার কলকাতায় সংহতি মিছিলডাকা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর আলাদাই মাত্রা নিয়েছে। আর তারই মাঝে এবার তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


এদিন অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন করে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। আর একইদিনে কলকাতার বুকে সংহতি যাত্রায় সামিল হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মোদি-যোগীদের বক্তব্যের শেষে এবার তোপ দাগলেন মমতা। তুলে আনলেন দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক প্রসঙ্গ। স্পষ্ট বললেন, 'যাঁরা দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে বলেন, তাঁরা আবার নিজেদের ধর্মের প্রবর্তক বলেন' !


মূলত  ২০১৮ সালে দক্ষিণেশ্বরে উদ্বোধন হয়েছিল স্কাইওয়াক। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তো বটেই পাশাপাশি কর্মসংস্থানও গড়ে উঠেছে ওই স্কাইওয়াককে কেন্দ্র করে। মেট্রোর সম্প্রসারণের জন্য় দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের জায়গা পরিবর্তন করতে বলেছিল মেট্রো রেল। গত বছরের ২০ই নভেম্বর, এই মর্মে চিঠি দেওয়া হয় PWD ডিপার্টমেন্টে। সেখানে, দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ও আলিপুর বডিগার্ড লাইনসের জায়গা পরিবর্তনের জন্য় রাজ্য়কে প্রস্তাব দেয় মেট্রো রেল। 


এরপরেই নবান্ন থেকে মুখ্য়মন্ত্রী স্পষ্টত জানিয়ে দিয়েছিলেন, মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক ও আলিপুর বডিগার্ড লাইনসের জায়গা পরিবর্তন করা হবে না। পরিবর্তে, রেলকে তার নিজের জমিতে সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'আমার রক্ত থাকতে দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না। আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স হেরিটেজ এলাকা, ভাঙতে দেব না। মেট্রোর কাজের জন্য আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স ভাঙতে বলা হচ্ছে। দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকে হাত দিলে বিবেকানন্দ, রাসমণিকে মনে করতে হবে।'


আরও পড়ুন, 'রাম মন্দিরের নির্মাণ আগুনকে নয়, নতুন তেজের জন্ম দিয়েছে', বার্তা প্রধানমন্ত্রীর


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'মেট্রোর প্রতিটা প্রকল্প আমার করা। আমি না থাকলে দিল্লি মেট্রো হত না। রেলে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস আমার করা। জোকা-তারাতলা মেট্রো আমার করা। ম্যাপ নিয়ে বসলে হবে না, এলাকা পরিদর্শনের পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রুট বদলাতে হলে অনেক জায়গা আছে, আমাকে বলুন, আমি দেব। কয়েকদিন পরে কালীঘাট ভাঙো, শুনব না। সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, কিন্তু হেরিটেজ ধ্বংস করতে দেব না।'