আশাবুল হোসেন, কলকাতা : কিছুদিন আগেই বারাসাতে সভা করে গিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর আজ, মঙ্গলবার জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়ায় প্রশাসনিক সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাবড়ার বাণীপুরের এই সভা থেকে একগুচ্ছ সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করার পরই সিএএ ইস্যুতে লাগাতার কেন্দ্রকে বাছা-বাছা বিশেষণে আক্রমণ শানালেন।
সোমবারই দেশজুড়ে জারি হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বা CAA। এই আবহে হাবড়ায় মতুয়া-গড়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সে-দিকে নজর ছিলই। হাবড়ায় বহু মতুয়া সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষের বাস। তাঁদের বারবার সতর্ক করে দিলেন, 'পুরোটাই ভাঁওতা, অধিকার কেড়ে নেওয়ার খেলা'
লোকসভা ভোটের আগেই সিএএ জারি হয়েছে সারা দেশে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে বিজেপি, সাবধান থাকতে হবে'। মতুয়া গড়ে দাঁড়িয়ে তাঁর দাবি, যে সিএএ কেন্দ্র ঘোষণা করেছে, তার বৈধতা নিয়ে সন্দেহ আছে। পুরোটাই ভাঁওতা, অধিকার কেড়ে নেওয়ার খেলা। দরখাস্ত করলে, নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যাবে। কাউকে বাংলা থেকে বিতাড়িত হতে দেব না।
আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দন সিএএ-র বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন। বারবার বাংলায় সিএএ লাগু করতে দেব না বলে বার্তা দিয়েছেন। আবারও মতুয়া গড়ে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, সিএএ কোনওভাবেই রাজ্যে প্রয়োগ করতে দেব না। বাংলায় এনআরসি করতে দেব না, ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেব না।
সেই সঙ্গে মমতার দাবি, সিএএ-র জন্য আবেদন করলে যাঁরা নাগরিক, তাঁরা অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবেন। এর আগে সোমবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছিলেন, 'যদি কোনও বৈষম্য হয় সেই জিনিষ আমরা মানি না। ধর্ম বৈষম্য হোক, লিঙ্গ বৈষম্য হোক। ছেলের হাতের মোয়া, ললিপপ এই ২ দিনে তো কাউকে দিতে পারবে না। বলবে পোর্টালে নাম লেখান। পোর্টালে তো সবাই নাম লেখাবে। আজকে যদি ক্যা করে বলেন আপনারা নাগরিক তাহলে কি এদিন নাগরিক ছিল না? এই জন্যই কি মতুয়াদের আধার কার্ড বাতিল হচ্ছিল? জমিজমা করেছে, চাকরি করছে তারমানে সেগুলো সব বাতিল? আইনত হবে তো বিষয়টা? এতদিন এদের ভোটেই তো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছে, এদের ভোটের কোনও মূল্য নেই। যদি ক্যা দেখিয়ে, যারা এখানকার নাগরিক তাঁদেরকে ক্যানসেল করা হয় আমরা স্ট্রং প্রতিবাদ করব। '
লোকসভা ভোটের আগে মোদি সরকার CAA কার্যকর করে দেওয়ায় সংঘাতের জল কোথায় গড়াবে, সেটাই দেখার। কারণ ইতিমধ্যেই বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর দাবি করেছেন, সিএএ লাগু হলে মানুষের উপকার হবে। এর ফলে কারও নাগরিকত্ব যাবে না।এর ফলে বিজেপির আসনসংখ্যা বাড়বে বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন :
নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন কোথায় ? এই নথিগুলি সঙ্গে আছে তো ?