ঝিলম করঞ্জাই, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : ১৪৪ ধারা কি বিরোধীদের আটকাতে শাসকের অস্ত্র? সন্দেশখালিকাণ্ডের আবহে ফের বিভিন্ন মহলে মাথাচাড়া দিচ্ছে সেই প্রশ্ন। সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বাধার মুখে পড়ে, ১৪৪ ধারা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বাম আমলে ঠিক যেমনটা করতেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আর তখন ১৪৪ ধারার পক্ষে সওয়াল করতে শোনা যেত জ্য়োতি বসু থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। এখন যে পথে হাঁটছে তৃণমূল।
সন্দেশখালির অশান্তির পর দশদিন পেরোতে চললেও সেখানে পৌঁছোতে পারেননি কোনও বিরোধী দলের নেতা। কিন্তু এখন ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করে বিরোধীদের আটকানো নিয়ে প্রশ্নের মুখে যে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, সেই তিনিই বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন ১৪৪ ধারার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন। ২০০৭ সালের কথাই ধরা যাক না।
বাম জমানায় সিঙগুর-নন্দীগ্রামে থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি পর, পৌঁছোতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হত মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে। আর তখনই ১৪৪ ধারার বিরুদ্ধে সরব হতেন তিনি। 'যদি একা ঢুকি, তোমার আপত্তির কী আছে! আমি তো ঢুকতে পারি। তুমি যদি বলো ১৪৪, ৫ জনের বেশি তুমি অ্য়ালাও করবে না। আমি যে কোনও জায়গায় যেতে পারি। আমি যে কারও বাড়িতে যেতে পারি। কোন আইনে তুমি আমাকে আটকাতে পারো?' ঠিক এই সুরই হালফিলে শোনা গিয়েছে অগ্নিমিত্রা পাল, অধীর চৌধুরীদের গলায়। সন্দেশখালি যাওয়ার পথে আটকে গিয়ে অধীর বলেন, 'আমরা ভদ্রভাবে বলতে এসেছিলাম সন্দেশখালিতে প্রবেশ কেন আমাদের জন্য নিষিদ্ধ। হাইকোর্ট বলছে ১৪৪ ধারা উঠিয়ে দাও। তারপরেও এখানকার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এখানে বিভিন্ন জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সেটাও তো পুলিশ বলতে পারে নাকি। পুলিশের তো উচিত যেখানে ব্যারিকেড করেছে সেখানে মাইক রেখে বলে দেওয়া এখানে ১৪৪ ধারা আপনারা এগোবেন না। আপনারা তারও ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না। ' কিছুদিন আগেই সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে, মানুষের আন্দোলনকে ১৪৪ ধারা লাগিয়ে দমানো যায় না।'
আজ বিরোধীদের আক্রমণের মুখে তৃণমূল যেভাবে ১৪৪ ধারার পক্ষে সওয়াল করছে, বাম জমানায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, জ্য়োতি বসুরাও জোর গলায় ঠিক সেরকমই করতেন। সেই সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছিলেন, ' আমি সিঙ্গুরে মিটিং করতে যাচ্ছি না ১৪৪ ধারা আছে বলে। ১৪৪ ধারা না রাখতে পারলেই ভাল হত। বিরোধীরা বোঝার নয়। ওই খুঁটি ধরে টান মারছে। একটা খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দিল। এটা কী ছেলেমানুষি হচ্ছে?'
প্রশ্ন একটাই, শেষ অবধি কি আদৌ সন্দেশখালিতে পৌঁছোতে পারবে বিরোধীরা?
আরও পড়ুন :
আবারও নামল পারদ? ফেব্রুয়ারির শেষে খেল দেখাবে শীত?