কলকাত: রাতের অন্ধকারে গার্ডরেল টপকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশই শুধু নয়, দিনের আলো ফোটার আগে পর্যন্ত নজর এড়িয়ে রয়েও গেলেন। কালীঘাটে (Kalighat News) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাড়িতে এহেন 'অনুপ্রবেশ' ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় (Mamata Banerjee Security) এমন গাফিলতি হয় কী ভাবে, উঠছে প্রশ্ন। কিন্তু শুধু বাড়ি নয়, কলকাতার বাইরেও বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা। কখনও রামপুরহাট (Rampurhat), তো কখনও নন্দীগ্রাম (Nandigram), বার বার অনভিপ্রেত ঘটনা সামনে এসেছে।
আগেও একাধিক বার মমতার নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হওয়ার অভিযোগ
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর জন্য জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা বরাদ্দ রয়েছে। তা সত্ত্বেও বার বার তাঁর নিরাপত্তায় গলদের অভিযোগ উঠে এসেছে। জেলে সফরের সময় অতীতে একাধিক বার এমন ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হিসেবে রামপুরহাটের কথা বলা যায়। বগটুই হত্যাকাণ্ডের তিন দিনের মাথায় সেখানে যান মমতা। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ একাধিক পদস্থ কর্তা। কিন্তু বগটুইয়ে যেখানে দাঁড়িয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথআ বলছিলেন মমতা, সেই জায়গা থেকে মাত্র ১২৫ মিটার দূরে মাটিতে পোঁতা ছিল বোমা। বেশ কয়েক দিন পর তা উদ্ধার হয়।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বানের আগে নন্দীগ্রামে গিয়ে আহত হন মমতা। ভোটের প্রচারে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় পায়ে চোট পান। তার জেরে হাঁটাচল বন্ধ গিয়েছিল তাঁর। প্রচার সারতে হয় হুইল চেয়ারে বসেই। আঘাত পাওয়া নিয়ে খোদ মমতা সেই সময় চক্রান্তের অভিযোগ এনেছিলেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, "একটি মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। সেই সময় কোনও পুলিশ ছিল না। এসপি ছিল না। ৪-৫ জন পায়ের ওপর দরজা বন্ধ করে দেয়।"
তার আগে, ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি, উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ভেঙে মমতার সভামঞ্চে উঠে পড়েন এক মহিলা। ২০১৩ সালের ২১ জুন টানা দু'ঘণ্টা নিরাপত্তা-বিচ্ছিন্ন ছিলেন বলে, কামদুনি থেকে ফেরার পর অভিযোগ করেছিলেন মমতা নিজেই। আবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে, ২০১০ সালের ৯ অগাস্ট, কোলাঘাটে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতার কনভয়ের একটি গাড়িতে ধাক্কা মারে একটি লরি।
নন্দীগ্রাম, বগটুইয়ের পর কালীঘাটের বাড়িতেও নিরাপত্তা লঙ্ঘন
তাতেই নয়া সংযোজন কালীঘাটের বাড়িতে গার্ডরেল টপকে সন্দেহভাজনের ঢুকে পড়ার ঘটনা। মমতার বসবাসের জন্যই ওই তাঁর বাড়ি এবং সংলগ্ন এলাকা হাই সিকিওরিটি জোনের মধ্যে পড়ে। তা সত্ত্বেও সকলের নজর এড়িয়ে ওই ব্যক্তি কী ভাবে বাড়িতে ঢুকে পড়লেন, রাতভর বাড়ির ভিতর রয়েও গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নিজের বাড়িতেই যেখানে নিরাপত্তা লঙ্ঘিত, সেখানে জেলা সফর বা অন্যত্র এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না, এমন গ্যারান্টি কে দেবেন, উঠছে এমন প্রশ্নও।