সুমন ঘড়াই, হাওড়া : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির চত্বরে ' লোহার রড নিয়ে' সন্দেহভাজনের ঢুকে পড়া নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা রাজ্যে। প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে এত কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিল ওই ব্যক্তি । এবার তাই আরও কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে নবান্নে ( Nabanna ) কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হল। নির্দেশিকা জারি ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ রিজার্ভ ফোর্সের তরফে।
জানা গিয়েছে, শুধু লুকিয়ে থাকাই নয়, জামার নিচে লোহার রড লুকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ( CM Mamata Banerjee ) বাড়িতে ঢুকেছিল হাসনাবাদের হাফিজুল মোল্লা। কালীঘাট থানায় এই মর্মে অভিযোগ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক। আর এরপরই আরও নড়েচড়ে বসেছে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। হাই প্রোফাইল সিকিওরিটি জোনে, ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে কীভাবে অভিযুক্ত ঢুকে পড়ল? তাহলে কি নিরাপত্তায় বড়সড় কোনও গলদ ছিল? উঠেছে প্রশ্ন। এর ফলে, এই কড়া সিদ্ধান্ত। নবান্নে ঢোকার আগে সব ধরনের মোবাইল ফোন জমা রেখে কাজে যেতে হবে পুলিশকর্মীদের। মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনেও। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদেরও এই নিয়ম মানতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক কেমন
VVIP হিসেবে জেড প্লাস নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী। ২৪ ঘণ্টা তাঁর বাড়িতে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা মোতায়েন থাকে। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সব সময় ৩২ থেকে ৩৬ জন নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জন কম্যান্ডো। থাকেন পার্সোনাল সিকিওরিটি অফিসাররা। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় সব মিলিয়ে, দিনভর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ১৫০ জন আধিকারিক মোতায়েন থাকেন। অথচ এত কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই বাড়ির চত্ত্বরে ঢুকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কীভাবে থেকে গেল এক সন্দেহভাজন?
২০১১ সালের ৬ই মার্চ, রেল মন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন হুগলির বাঁশবেড়িয়ার এক যুবক। ২০১৭ সালেও, একই ধরনের ঘটনা হয়েছিল। ২০২১ সালের ২৫ জুলাই, আরও একজন আদিগঙ্গায় নেমে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে আটকান। এরই মধ্যে এবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি চত্বরে ঢুকে পড়লেন হাসনাবাদের বাসিন্দা হাফিজুল মোল্লা। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে সোমবার নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা অধিকর্তা ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার।
আরও পড়ুন -
ভ্যাকসিন নিতে অনীহা, এ রাজ্য থেকে ১০ লক্ষ ডোজ চলে গেল পটনায়