কলকাতা: নেতাজি ইন্ডোরে ইমামদের সম্মেলনেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে যাদবপুর প্রসঙ্গ। সম্প্রতি যাদবপুর মেন হস্টেলে এক ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে উঠে এসেছে অকথ্য ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ। তার সঙ্গেই জড়িয়েছে রাজনীতির রং। ওই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ফের বামেদের নিশানা করলেন মমতা। এদিন সম্মেলনে তিনি বলেন, 'যাদবপুর নিয়ে আগে গর্ব করতাম, অথচ একটা ছেলেকে সিপিএমের ইউনিয়ন মেরে ফেলল। এরা জীবনে বদলাবে না, এত রক্ত নিয়েও এরা বদলায়নি।'
আগেও নিশানা বামেদের:
এর আগেও যাদবপুরকাণ্ডে সিপিএমকে আক্রমণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেছিলেন, 'এরা মার্কসবাদী, কখনও বিজেপির সঙ্গে, কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে ঘর করে। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা লাগাতে দেয় না।' মুখ্যমন্ত্রী সেবার বলেছিলেন, 'নিহত ছাত্রের বাবা আমার কাছে বিচার চেয়েছেন। অত্যাচার করে ছেলেটাকে উপর থেকে ছুড়ে ফেলে হয়েছে। যাদবপুর (Jadavpur University) এখন আতঙ্কপুর। যাদবপুরে পড়াশোনা ভাল হতে পারে, কিন্তু পড়াশোনায় ভাল হলেই মানুষ হয় না। এই জন্যই আমি যাদবপুরে যেতে চাই না।'
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত রাজনীতি। সিপিএম (CPIM)-সহ অন্য বাম দল, বিজেপি এবং তৃণমূল- সকলেই রাস্তায় নেমেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর, যাদবপুর থানা চত্বর বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন দলের তরফে বারবার ধর্না, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলেছে। শুভেন্দু অধিকারী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই সভা করেছিলেন। সেই সভা ঘিরে বিজেপি এবং RSF-এর সংঘর্ষে ঝরেছে রক্তও। ব়্যাগিং রোখা এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে মিছিল করেছে বামেরাও। তারই মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশন জমা দেওয়া নিয়ে বচসা-হাতাহাতিতে জড়ায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং ডিএসও ও এসএফআই। এই ডামাডোলের মধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে ইউনিট ঘোষণা করেছে তৃণমূল।
সিপিএম সাংসদ এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'মমতারই সমস্ত মদতপুষ্ট যে যে সংগঠন রয়েছে, তারই লোকজন এই কাজ করেছে। পুলিশও গ্রেফতার করেছে। উনি আতঙ্কিত হয়ে এইসব বলছেন। ভালই হচ্ছে, সকলের সামনে সবটা প্রকাশ পাচ্ছে। উনি এমন কাজ করেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একদন উপাচার্য নিয়োগ করতে সাহায্য় করলেন যিনি আরএসএস-এর লোক।
চলছে তদন্ত:
রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে গেলেন যাদবপুরের ডিন অফ স্টুডেন্টস্ রজত রায়। সূত্রের খবর, ডিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ওইদিন রাতে ফোন পেয়ে তিনি কী করেছিলেন ? কাকে ফোন করেছিলেন রজত রায় এবং কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? কিন্তু আজ ডিন অফ্ স্টুডেন্টসের বয়ান রেকর্ড করা যায়নি। ব্য়স্ততা আছে বলে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান ডিন অফ স্টুডেন্টস। কমিশনের দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে হস্টেল সুপারের। তলব করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির দুই প্রতিনিধিকেও।
আরও পড়ুন: চা বাগান দখল কেন্দ্র করে সংঘর্ষ! ছররা গুলিতে জখম ১৩