কৌশিক গাঁতাইত, আসানসোল: নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে রাজ্য সরকারের। বেশ কিছু ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশেই চলছে সিবিআই তদন্ত। অনেক ক্ষেত্রে মামলা চলার কারণে থমকে রয়েছে নিয়োগ। এবার এ সব নিয়ে তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। চাকরি তৈরি, তবে পেতে গেলে আদালতকে দিয়ে অর্ডার করাতে হবে। এমনই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী:
এদিন আসানসোলের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এটা আদালতের বিষয়। আদালতের সঙ্গে কথা বলুন। আমার ১৭ হাজার চাকরি তৈরি আছে। যেহেতু আদালত বিষয়টি দেখছে, তাই আমার পক্ষে করা সম্ভব নয়। আদালতকে দিয়ে যদি অর্ডার  করাতে পারেন, তাহলে আমার আপত্তি নেই। আপনারা আদালতকে গিয়ে বলুন। আমি আদালতের কথা মানব। আপনারা কেস করেছেন। আপনারা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলুন। আমার হাতে নেই।'


মমতার তোপে মামলাকারীরা:
তিনি আরও বলেন, 'আরও ৫ হাজার রাখা রয়েছে যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন তাঁদের জন্য, কোর্ট অর্ডার না দিলে করতে পারিনি। আমি নয়, আদালতে  আপনারা গিয়েছেন। আমাদের না বলে, যাঁরা কোর্টে কেস করিয়েছেন, আপনাদের হয়ে যাঁরা সিপিএমের আইনজীবী দাঁড়িয়েছেন...বিকাশবাবুদের বলুন, বিকাশবাবু আপনার তো পয়সার অভাব নেই, আপনি কেস করে আমাদের ছেলেমেয়েদের চাকরি বন্ধ করে দিলেন আপনার তো টাকার অভাব নেই। আপনি যেমন আমাদের চাকরি বন্ধ করেছেন, আপনি আবার আমাদের চাকরি চালু করবেন।' 


এদিন মমতা বলেছেন, 'এখানকার শিক্ষকরা ৩৫-৪০ হাজারের মতো বেতন পায়। আমাদের সরকারি চাকরি ৬০ বছরের জন্য। ত্রিপুরায় ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি গেছে। একজনের চাকরি ফেরাতে পারেনি বিজেপি। আমি চ্যালেঞ্জ করছি আমি ফিরিয়ে দেব। তার কারণ আমি কোর্টের অর্ডার মানব। একটি প্যানেলের টাইম বাড়িয়ে দিয়েছি। পরীক্ষা হবে কী করে যদি কোর্টে কেস চলে? আপনারা প্রেসার দিন। আমার যা সহযোগিতা করার করব। বিকাশ রাজনীতি করবে, পালিয়ে যাবে। বিজেপি রাজনীতি করবে, পালিয়ে যাবে। আমি রাজনীতি করতে আসি না।'


সিপিএমের কটাক্ষ:
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী এত অসত্য কথা বললে কিছু বলার নেই। ওঁর ১৭ হাজার চাকরি কোথায় কোর্ট বন্ধ করেছে? যে চাকরিগুলি ইন্টারভিউ ছাড়া, দুর্নীতি করে দেওয়া হয়েছে। সেটা হতে পারে না। দুর্নীতি করে যাঁদের দিয়েছেন সেটা বন্ধ করে যোগ্যদের চাকরি দিন। এটাই তো কোর্ট বলেছে। শিক্ষামন্ত্রীই বলেছেন সাড়ে তিন লক্ষ শূন্যপদ।' শিক্ষক-দুর্নীতি মামলায় অন্যতম আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'চাকরি মানে টাকা পয়সা নিয়ে চাকরি দেওয়া নয়। পশ্চিমবঙ্গে যতগুলো শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, সবকটিতে দুর্নীতি সামনে এসেছে। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী এসব বলছেন।' 


আরও পড়ুন:  ‘১৭ হাজার শিক্ষকদের চাকরি তৈরি আছে’, আসানসোলে নতুন প্রকল্প ও চাকরির ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর