কলকাতা:  দিল্লির অলিন্দ ছাড়িয়ে পেগাসাস (Pegasus Controversy) বিতর্ক ঢুকে পড়েছে বাংলার রাজনীতিতেও। তা নিয়ে গেরুয়া শিবির যখন তীক্ষ্ম আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানিয়ে দিলেন, শুধু বাংলা নয়, দেশের সব রাজ্যেই পেগাসাস কেনার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু পত্রপাঠ সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন তিনি।


বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং উপ নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই ফের পেগাসাস বিতর্কে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, “ওরা সব জায়গাতেই বিক্রি করতে এসেছিল। আমাদের পুলিশের কাছেও বিক্রি করতে এসেছিল ওরা। প্রায় ৪-৫ বছর আগে। দাম বলেছিল ২৫ কোটি টাকা। আমার কাছে খোবর এসে পৌঁছয়। আমি বলেছিলাম, না, আমাদের চাই না।”


পেগাসাস কেনায় না বলার পিছনে মমতা যুক্তি দেন যে, দেশদ্রোহিতার মোকাবিলায় অথবা দেশের নিরাপত্তাজনিত কারণে পেগাসাসের ব্যবহার এক জিনিস। কিন্তু যে ভাবে রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণে পেগাসাস ব্যাবহার করা হচ্ছে, বিচারক-অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে, তা কখনওই কাম্য নয়।


আরও পড়ুন: Mohammed Salim: সূর্যকান্ত জমানায় ইতি, নতুন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম


ঝালদায় নিহত কংগ্রেস নেতার (Jhalda Congress Leader Murder) ভাইপো অডিও ক্লিপ এনে তৃণমূলের তরফে চাপসৃষ্টির অভিযোগ এনেছেন সম্প্রতি। সেই প্রসঙ্গে বুধবার পেগাসাস নিয়ে বিধানসভায় মুখ খোলেন মমতা। সাধারণ কথাবার্তা রেকর্ড করে ভাইরাল করে দেওয়াকে পেগাসাসকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। সেখানেই জানান যে, বছর তিনেক আগে বাংলার কাছেও পেগাসাস কেনার প্রস্তাব এসেছিল।


মমতার এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমে পড়েন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেই আবহেই এ দিন ফের পেগাসাস নিয়ে মুখ খুললেন মমতা।


ইজরায়েলি (Israeli Spyware Pegasus) প্রযুক্তি সংস্থা এনএসও-র তৈরি স্পাইওয়্যার হল পেগাসাস। ফোনে আড়িপাতা, ইমেল হ্যাক করার কাজে এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়। ভারতে পেগাসাস ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত গত বছর। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তদন্তে জানা যায়, কেন্দ্রীয় সরকার ওই স্পাইওয়্যার কিনে বিরোধী শিবিরের নেতা, রাজনৈতিক কৌশলী, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ধর্মগুরু, নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক এমনকি সিবিআই আধিকারিকদের উপর নজরদারি চালানো হয়, তাঁদের ফোনে আড়িপাতা হয়।


রাহুল গাঁধী থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর, প্রাক্তন সিবিআই প্রধান অলোক বর্মা, প্রাক্তন জেএনইউ ছাত্রনেতা উমর খালিদ, প্রয়াত সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামী-সহ কমপক্ষে ৩০০ জনের ফোনে আড়িপাতা হয়। এর মধ্যে গত বছর জেলবন্দি অবস্থায় মৃত্যু হয় স্ট্যান স্বামীর।