কলকাতা: সিপিএম-এর (CPM) নতুন রাজ্য সম্পাদক হচ্ছেন মহম্মদ সেলিম (Mohammed Salim)। রাজ্য কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত হল সেলিমের নাম। সেলিম আগে থেকেই দলের পলিটব্যুরোর সদস্য। তাঁর সঙ্গে এ বারে সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে ছিলেন শ্রীদীপ ভট্টাচার্যও। তবে শেষমেশ রাজ্য কমিটির বৈঠকে সেলিমের নামেই সিলমোহর পড়ল।
গত ১৫ মার্চ থেকে রাজ্য সিপিএম-এর তিন দিনব্যাপী রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ছিল তার শেষ দিন। আর এ দিনই সেলিমের নামে সিলমোহর পড়ল। একই সঙ্গে নতুন রাজ্য কমিটি থেকে সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, রবীন দেব বাদ পড়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
সিপিএম-এর নতুন রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়তে চলেছেন মৃদুল দে, নেপালদেব ভট্টাচার্য, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ও। তাঁদের জায়গায় নতুন রাজ্য কমিটিতে আসছেন সিপিএমের নতুন রাজ্য কমিটিতে সুশান্ত ঘোষ, শতরূপ ঘোষ, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, মধুজা সেন রায়, গার্গী চট্টোপাধ্যায়, অনাদি সাউ, দেবলীনা হেমব্রম, কনীনিকা ঘোষ।একটি আসন ফাঁকা রেখে সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে ৭৯ সদস্য সামিল।
অন্য দিকে, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ছেন বিমান বসু । এ দিন দায়িত্ব পেয়ে সেলিম বলেন, "নিজেরা না মেনে, প্রতি ১৫দিন অন্তর করোনার নতুন বিধিনিষেধ। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বদলে মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা হয়েছে। দুই সরকারের জন্য করোনায় মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে রেড ভলান্টিয়ার্স লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। রেড ভলান্টিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, রাজনৈতিকভাবে সচেতন করার কাজ চলবে। বিজেপি থেকে তৃণমূলে গিয়েছে বলে আসানসোলে ভোট। এত ভোট পাওয়ার পরেও ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলরকে খুন করা হয়েছে। এই জল্লাদরাজ থেকে মুক্তি চাই।"
রাজ্যে বাম জমানার শেষ হয়েছে আগেই। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে, ততই রাজ্য রাজনীতি থেকে দূরত্ব বেড়েছে লাল শিবিরের। বরং অস্তিত্বহীন অবস্থান থেকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেও তাই দৌড়ে ক্রমশই পিছিয়ে পড়তে হয়েছে বাম শিবিরকে।
গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে শূন্য়ে নেমে গিয়েছে সিপিএম। কলকাতা নির্বাচনে সেই তুলনায় খানিকটা মুখরক্ষা হয়েছে। বিজেপি-কে ছাপিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পেরেছে তারা। বকেয়া পুরভোটে তাহেরপুরে যদিও লাল ঝান্ডাই উড়েছে, কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে বামেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি।
এমন পরিস্থিতিতে পরাজয়ের কারণ বিচার বিশ্লেষণ করে দেখতে, সংগঠনে রদবদল ঘটাতেই তিন দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়। তার শেষে সেলিমের নামই রাজ্য সম্পাদক হিসেবে উঠে এল। তবে তাতেও পুরোপুরি অসন্তোষ কাটছে না। শ্রীজীবকে মাথায় রাখলে, দলের তরুণ তুর্কিদের উৎসাহ বাড়ত বলে মনে করছেন একাংশ। বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম-কংগ্রেস জোটে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে সামিল করা নিয়েও সেলিমের ভূমিকা সমালোচিত। তবে দলীয় নেতৃত্ব তাঁর উপরই আস্থা রাখলেন।