সন্দীপ সরকার, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও আবীর দত্ত, কলকাতা : 'আমার যেটুকু মনে হল, আমাকে হাত নাড়লেন, ভাল-ই আছেন। স্থিতিশীল আছেন।' হাসপাতালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখে এসে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেল ৪ টে ১০ মিনিট নাগাদ উডল্যান্ডস হাসপাতালে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখান থেকে হাসপাতালের ৫১৬ নম্বর কেবিনে যেখানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের চিকিৎসা চলছে, দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও। মিনিট দশেক হাসপাতালে থাকার পর বেরিয়ে এসে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শরীর ঘিরে স্বস্তির খবর দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


গত শনিবার বিকেলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (Budhhadeb Bhattacharya)। ফুসফুসে সংক্রমণ সহ বেশ কিছু সমস্যায় ভুগছেন তিনি। যার জেরে গত দু'দিন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ায়ে সোমবার দুপুরে তাঁকে বের করা হয়েছে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন থেকে। সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশনের বদলে এই মুহূর্তে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। চলছে বাইপ্যাপ সাপোর্ট।


বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'আমি দেখলাম ওঁর জ্ঞান আছে। হাত নাড়লেন। ভালই আছেন। ভেন্টিলেশন খুলে নেওয়া হয়েছে। বাইপ্যাপ সাপোর্ট চলছে। আমার দেখে মনে হয়েছে উনি ভালই আছেন। বাকি চিকিৎসকরা জানাবেন।' যারপরই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা সরকারিভাবে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন খুলে নেওয়ার কথা জানান। আগের থেকে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অনেকটা ভাল আছেন, বলেও জানান তাঁরা। 



 


প্রসঙ্গত, সকালে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ফুসফুসের সিটি স্ক্যান করা হয়। সিটি থোরাক্স রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা মনে করছেন, বুদ্ধবাবুর ফুসফুসে সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ হতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ছবি দেখে মনে হচ্ছে, ফুসফুসে সংক্রমণ এখন অর্গানাইজিং পর্যায়ে রয়েছে। অর্থাৎ, সংক্রমণ আর বাড়ছে না। এছাড়াও, দেখা গিয়েছে বুকে সংক্রমণের কারণে জল জমার পরিস্থিতি নেই। তবে, বাঁদিকের ফুসফুসের নীচের অংশ ও ডানদিকের ফুসফুসের নীচের দিকের মাঝামাঝি অংশে সংক্রমণ রয়েছে। সিওপিডি-র পুরনো সমস্যা, ফাইব্রোসিসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুস। সেই ক্ষতির পরিমাণ কতটা, তা বুঝতে পুরনো সিটি স্ক্যান রিপোর্টের সঙ্গে নতুন রিপোর্ট মিলিয়ে দেখা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে বুদ্ধবাবুকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করা আনার প্রক্রিয়া শুরু করবেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অ্যান্টিবায়োটিক কতটা কাজ করছে, সিটি থোরাক্স এবং সি রিয়্যাক্টিভ প্রোটিন টেস্টের ফলাফল দেখে, তা বোঝা যাবে। গত ২৪ ঘণ্টা জ্বর আসেনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। চিকিৎসকরা মনে করছেন, অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করায় জ্বর আসা বন্ধ হয়েছে। সি রিয়্যাক্টিভ প্রোটিন টেস্টের রিপোর্ট দেখে বুদ্ধবাবুর ভেন্টিলেশন নির্ভরতা ধাপে ধাপে কমানো নিয়ে চিকিৎসকরা আলোচনা করবেন। 


আরও পড়ুন- 'উনি পারবেন', বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্বাস্থ্য নিয়ে আশার বার্তা চিকিৎসকের