কলকাতা: দুর্গাপুজো শেষ হতেই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। আর সেদিনই একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) সরকারের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারই ভোর থেকে সল্টলেকে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আর তা নিয়েই তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা। তিনি বলেন, 'জ্যোতিপ্রিয়র স্বাস্থ্য খারাপ, সুগার আছে, যদি মারা যায় তাহলে বিজেপির বিরুদ্ধে এফআইআর করব। নাম বলানোর জন্য অত্যাচার করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।'


পুজোর পর বৃহস্পতিবারই ছিল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের প্রথম সাংবাদিক বৈঠক। পুজোর ঠিক আগে পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালায় সিবিআই। সেই প্রসঙ্গও এদিন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, 'কাল ববির স্ত্রী বলেছেন, ঘি-এর কৌটোটাও উল্টে দিচ্ছে। চিনির কৌটো উল্টে দিচ্ছে। কটা শাড়ি আছে, কটা কসমেটিকস আছে, তারও ছবি তুলছে। একটাও বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে? বিজেপির চোরেদের বাড়িতে কেন তল্লাশি হয় না?'


জ্যোতিপ্রিয়র বাড়িতে এখনও প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। রেশন দুর্নীতি মামলায় চলছে এই তল্লাশি।  সকাল ৬টা ১০-এ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যান ED-র অফিসাররা। সল্টলেকের BC ব্লকে ২৪৪ ও ২৪৫, পাশাপাশি দুটি বাড়ি রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। দুটি বাড়িই ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ED সূত্রে খবর, মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।


রেশন বণ্টন দুর্নীতি (Ration Scam Case) মামলায় ED-র স্ক্যানারে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আপ্ত সহায়ক অমিত দে। নাগেরবাজারে ৩টি ফ্ল্যাট রয়েছে অমিতের। এদিন সেখানেও হানা দেয় ED। সবকটি ফ্ল্য়াটই তালাবন্ধ। সূত্রের খবর, গতকালের হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসে অমিত দে সমুদ্র সৈকতের সামনে একটি ছবি পোস্ট করেন। কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে পুরীতে থাকতে পারেন অমিত দে। তাই ভুবনেশ্বর থেকে ৩টি দল সেখানে পাঠানো হচ্ছে। নাগেরবাজারের স্বামী বিবেকানন্দ রোডে ভালোবাসা অ্যাপার্টমেন্টের চারতলায় জোড়া ফ্ল্যাট রয়েছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর PA অমিত দে-র। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে নাগেরবাজারের ভগবতী পার্কের পারুল আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন অমিত দে। চলতি বছরের রথের দিন স্বামী বিবেকানন্দ রোডের এই আবাসনে আসেন। স্থানীয়দের দাবি, কয়েক বছর আগে যাঁকে তাঁরা সাধারণ তৃণমূল কর্মী হিসেবে চিনতেন, সেই অমিত ২০১১ সালে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক খাদ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর আপ্ত সহায়ক হন। তখন থেকেই অমিত দে-র নজরকাড়া উত্থান। স্থানীয়দের দাবি, নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি এমনকী, রিসর্টও আছে অমিতের। 


আরও পড়ুন: 'বাড়িতে চিনি-তেল-নুনের কৌটো উল্টে দেখছে', তৃণমূল নেতাদের ঘরে ED তল্লাশি নিয়ে গর্জে উঠলেন মমতা