রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: দলছুট বুনো হাতির আছাড় খেয়ে বানারহাট ব্লকের আপার কলাবাড়িতে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা দেহ আটকে রেখে বন্যপ্রাণ শাখার কর্মীদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। (Wild Elephant At Banarhat) 


কী জানা গেল?
তাঁদের অভিযোগ, গত কুড়ি দিনে বুনো হাতির হামলায় ওই এলাকায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি ভয়ঙ্কর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, ক্ষোভ তাঁদের। এমনকি হাতি গ্রামে ঢুকে পড়লেও তাড়ানোর ব্যবস্থা করেন না বনকর্মীরা, অভিযোগ রয়েছে আরও। এই হাতির হামলার ঘটনাতেই অতিষ্ঠ হয়ে চাষাবাদ প্রায় বন্ধের মুখে এলাকায়। এদিনের ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। গ্রামবাসীরা জানান, উচ্চস্তরের বনাধিকারিকেরা যদি ঘটনাস্থলে না আসেন, তা হলে তাঁরা কোনও মতেই মৃতদেহ নিয়ে যেতে দেবেন না। এ রাজ্যের নানা প্রান্তে, হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা নেহাৎ কম নয়। গত মার্চ মাসেই যেমন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের অন্তর্গত হাতির হানায় মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ার। মৃতার নাম ছিল শিলা ঘোড়ই। বয়স ৬০ বছর। মৃতার ছেলে জানিয়েছিলেন, মা জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই হাতির সামনে পড়ে যান। তখনই গুরুতর জখম হন শিলা। সকালে তাঁকে মেদিনীপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। একটু পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে, গত জানুয়ারি মাসে সমস্যায় পড়েছিল বাঁকুড়াও। 


আগেও যা..
সে বার মারমুখী হাতিকে (elephant) চিহ্নিত করে উত্তরবঙ্গে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে বন দফতর। উত্তর বনবিভাগের বড়জোড়া ও বেলিয়াতোড় এলাকায় দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে বনবিভাগ। মারমুখী হাতিকে ট্রাকিং করার কাজ শুরু করে বনদফতর। ঠিক হয়, আগামী দুদিনের মধ্যেই মারমুখী হাতিকে ট্রাক করে ধরে উত্তরবঙ্গে পাঠাবে বনবিভাগ। শুরু হয় মারকুটে হাতিটিকে ধরার প্রস্তুতি পর্বও। এদিকে আর যাতে হাতির আক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটে হাতির দলের উপর বিশেষ নজরদারিরও ব্যবস্থা নেয় বনদফতর। জানা যায়, বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বেলিয়াতোড় ও বড়জোড়া এলাকায় ৮০টির বেশি হাতি রয়েছে। এর মধ্যে এক রাতেই বেলিয়াতোড় ও বড়জোড়া এলাকায় দুটি পৃথক ঘটনায় হাতির আক্রমণে দুজনের মৃত্যু হয়েছিল। তাতে ঘুম উড়ে যায় বনবিভাগের কর্তাদের। বস্তুত হাতিটি যেভাবে আক্রমণ করছে তাতে ওই হাতির আচরণও বনদফতরের মনে সন্দেহ তৈরি করেছে। দলের মধ্যে থেকেই এই হাতি ফের হামলা চালাতে পারে বলেও মনে করছেন বনদফতরের কর্তারা। তাই ওই হাতিকে ক্লোজ নজরদারির মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন:বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে অপসারণ করা উচিত, বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়