কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Scam) হেফাজতে পাওয়ার পর, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) রাতভর জেরা ইডি-র। ইডি (Enforcement Directorate) সূত্রে খবর, এখনও তদন্তে অসহযোগিতা করছেন মানিক। তবে তাঁর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসতে পারে মনে করছেন ইডি আধিকারিকরা। 


গ্রেফতারির পর রাতভর মানিককে জিজ্ঞাসাবাদ ইডি-র


মানিকের বিরুদ্ধে তদন্তে ইডি-র হাতিয়ার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। ইডি সূত্রে দাবি, সেই চ্যাটে মানিকের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। সেই সব অভিযোগ মানিককেই ফরোয়ার্ড করেছিলেন পার্থ। ইডি সূত্রে দাবি, মানিকের মোবাইল ফোনে মিলেছে সন্দেহজনক DD ও RK-র নাম। এই দু’জনের পরিচয় সম্পর্কেও জানতে চায় ইডি, খবর সূত্রের।


আরও পড়ুন: SSC Scam: শুরু হয়েছিল পার্থকে দিয়ে, পর পর গ্রেফতার শান্তিপ্রসাদ-মানিকরা, কাদের হাতে ছিল শিক্ষা! উঠছে প্রশ্ন


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পর মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিককে গ্রেফতার করে ইডি। আজই ব্যাঙ্কশাল আদালতের ভেকেশন কোর্টে তোলা হয় পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ককে। সেখানে তাঁকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজত দেওয়া হয়েছে। গতকালই সিজিও কমপ্লেক্সে ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মানিক ভট্টাচার্যকে। ইডি সূত্রে খবর, বয়ানে অসঙ্গতি ও তদন্তে সহযোগিতা না করায় গভীর রাতে গ্রেফতার হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি। 


প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক


তৃণমূল জমানায় প্রায় একদশক ধরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিক টেট-দুর্নীতি মামলায় তাঁকে সভাপতির পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জানান, মানিক ভট্টাচার্য একজন নীতিহীন ব্যক্তি। ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খাওয়ার পর, হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান মানিক। সর্বোচ্চ আদালতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতিকে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের কিংপিন বলে দাবি করে CBI। এর পরই ১০ অক্টোবর পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যর রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়ায় সুপ্রিম কোর্ট। 


ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকের বিরুদ্ধে পার্থর কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন জনৈক ব্যক্তি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে লেখা হয়েছিল,  'দাদা, মানিক ভট্টাচার্য যা তা ভাবে টাকা নিচ্ছেন। করোনার সময় কলেজ বন্ধ থাকাকালীন, প্রত্যেকটা বেসরকারি বিএড কলেজ থেকে ছাত্র পিছু ৫০০ টাকা করে নিয়েছেন। ছাত্ররা টাকা দিতে না পারায় কলেজই টাকা দিয়েছে। আবার তিনি ছাত্র পিছু ৫০০ টাকা করে চেয়েছেন। তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে হেনস্থা করেন এবং টাকা দেওয়ার জন্য হুমকি দেন। নদিয়ায় প্রাথমিকে টেটের ইন্টারভিউ হয়ে গেছে, কিন্তু মানিক ভট্টাচার্য চেয়ারম্যানকে বলছেন, ইন্টারভিউয়ের নম্বর না বসিয়ে, সই করা মাস্টার শিট দিতে'। ইডি-র দাবি, এই মেসেজ পেয়েও মানিকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি পার্থ। বরং ওই মেসেজ মানিককেই ফরোয়ার্ড করে দেন তিনি।