কলকাতা : গত বছর সারা শহর ও বাংলাকে নড়িয়ে দিয়েছিল  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা। সেই ঘটনার পদন্ত করতে গিয়ে উঠে আসে ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ। পাশ করে যাওয়া বহু পড়ুয়াও হস্টেলে থেকে যেতেন সেখানে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ঘটনা যেন যাদবপুরের ঘটনারই রিপিট টেলিকাস্ট।


বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর দাদাগিরি, তাঁদের হেনস্থা করা ও তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলপন্থী কয়েকজন চিকিৎসক নেতার বিরুদ্ধে। তার মধ্যে থেকেই একটি নাম উঠে আসে - মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক। কে এই ব্যক্তি? ইনি তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, ৩ বছর আগে পাসআউট হওয়া সত্ত্বেও হস্টেলের একটি রুম দখল করে মাতব্বরি চালিয়ে যাচ্ছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের টিএমসিপি ইউনিটের মুখ্য আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর।   বৃহস্পতিবার তা নিয়ে ধর্নার পর অধ্যক্ষের কাছে নালিশ জানান তাঁরা।  


আর জি কর-কাণ্ডে তোলপাড়ের আবহে অভিযোগের পাহাড় নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তাররা। তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আর পাঁচটা মেডিক্যাল কলেজের মতো মেদিনীপুর মেডিক্যালেও জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক-সহ তৃণমূলের একাধিক চিকিৎসক নেতা সব সময় তাঁদের হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।  পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রকাশ পেতেই, আন্দোলনের চাপে পড়ে তৃণমূলের অভিযুক্ত চিকিৎসক নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিকের ক্যাম্পাসে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। 


মেয়াদ ফুরনোর পরেও হস্টেলে ঘাঁটি গেড়ে চলে সিনিয়রের দাদাগিরি। মুস্তাফিজুর রহমানকে প্রতিক্রিয়ার জন্য ফোন করা হলে, ব্যস্ত আছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেনে তিনি। এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, টিএমসিপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, তাঁর এবিষয়ে কিছু জানা নেই। তাই এনিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না।


বৃহস্পতিবার বিকেলে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে ধর্নায় বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সাত ঘণ্টা বৈঠকের পর লিখিত আশ্বাসে অবস্থান তুলে নেওয়া হয়। যদিও আর জি কর-কাণ্ডে তাঁদের যে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে, তা চলবে বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের জুনিয়র ডাক্তাররা। 


যে সব অননুমোদিত আবাসিক এখনও হস্টেলে রয়েছেন, তাঁরা যাতে অবিলম্বে রুম খালি করে দেন, তার জন্য দ্রুত নোটিস ইস্যু করা হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা মনোনীত পড়ুয়া প্রতিনিধিদের নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব হস্টেল কমিটি, অভিযোগ শোনার কমিটি এবং নিরাপত্তা ও সুরক্ষাজনিত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। হাউসস্টাফ থেকে শুরু করে ইন্টার্নদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ উঠে এসেছে, মেদিনীপুর মেডিক্যালের কলেজ কাউন্সিল তার তদন্ত করবে বলেও জানানো হয়েছে। গতকাল লিখিত এই আশ্বাসের পরই প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা ধর্না তুলে নেন। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: RG Kar Viral Audio Clip: ছিটেফোঁটা সমবেদনাও নেই গলায়, এভাবে দুঃসংবাদ দেয় কেউ? RG কর ভাইরাল অডিও নিয়ে প্রশ্ন মনোবিদদের