মেদিনীপুর: "হাউস ফর অল" প্রকল্পের বাড়ি পাওয়া থেকে বঞ্চিত নাকি একাধিক বিজেপি পরিবার ! এমনই অভিযোগ উঠেছে খোদ মেদিনীপুর পৌর এলাকার ২০নম্বর ওয়ার্ড মণ্ডলমাঠ হরিজন পাড়া এলাকায়। অভিযোগকারীদের দাবি, শুধুমাত্র বিজেপি করেন বলেই, তাঁরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
কারও ভেঙে পড়েছে বাড়ি, তো আবার কারও বাড়িই নেই ! সন্তান-সন্ততি নিয়ে ত্রিপলের নিচেই চলছে রবি কদমা, সুরেশ মাধাই দের দিনগুজরান। খোলা আকাশের নিচেই চলছে রান্নাবান্না, এমনকী শৌচ কাজটুকুও। এমনকী দেখা যাচ্ছে আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে শুয়োর।
এভাবেই তাঁরা দীর্ঘ ১৫-২০ বছর বসবাস করছেন । নর্দমা পরিষ্কার করেই চলে তাদের সংসার। অভিযোগ,বারংবার তাঁরা ঘরের জন্য পৌরসভায় আবেদন করেছেন কিন্তু কোনও ফল হয়নি। একবারের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ দেখতেও আসেননি বলে দাবি তাঁদের। সরকারি সাহায্য বলতে মিলছে শুধু রেশনের চাল। তাঁদের ধারণা, গেরুয়া শিবিরের সমর্থক হওয়ার জন্যই তাঁদের বাড়ি দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা এখন চায় পৌরসভা গঠন হোক বা দলের যে কেউ যেন তাঁদের মাথার উপর একটি ছাদের ব্যবস্থা করে দেয়।
আরও পড়ুন:
'কাজ করার থেকে টাকা চাওয়ার লোক বেশি', এবার বিস্ফোরক প্রবীর ঘোষাল
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই এলাকার ১৫টি দুঃস্থ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মেদিনীপুর পৌরসভায় বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদন করে এসেছে, কিন্তু তারা বাড়ি পাচ্ছে না। অথচ এলাকার তৃণমূল কর্মীদের ঠিক বাড়ি হয়ে যাচ্ছে !
এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল। তৃণমূলের মেদিনীপুর শহরের সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব জানিয়েছেন, এই অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যে। যাঁদের নাম আছে পর পর তাঁদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এমন বহু উদাহরণ আছে যে অন্য দল করে অথচ তাঁদের পৌরসভা বাড়ি দিয়েছে। সুতরাং অভিযোগ করলেই হবে না, তার সত্যতা থাকা দরকার।
তবে পৌরসভায় কেউ এলে, কে বিজেপি কে সিপিএম বা কে কংগ্রেস দেখা হয় না,গরিব মানুষদের পাশে রয়েছে মেদিনীপুর পৌরসভা। মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান জানিয়েছেন,মেদিনীপুর শহরে পুরোদমে ' হাউস ফর অল' প্রকল্পের বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে।২৫ টি ওয়ার্ডেই যাঁদের বাড়ি নেই, সবার বাড়ি নির্মাণ হবে। কিন্তু কাজের গতি কিছুটা কমে গিয়েছিল কারণ কেন্দ্রীয় সরকার যে পরিমান টাকা দেওয়ার কথা সেই পরিমান টাকা দেয়নি। তবে যারা আবেদন করেছে এবং টাকা জমা দিয়েছে সবার বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে যা অভিযোগ উঠছে তা সত্য নয়। তাঁর দাবি, যাঁরা বাড়ি পাননি বলে অভিযোগ করছেন, তাঁরা হয়ত টাকা জমা দিতে পারেনি বলে বাড়ি হয়নি। অথবা তিনি পৌরসভায় আসেননি বা কোনো আবেদন জমাও দেননি। এর পাশাপাশি তিনি এও বলেন, অভিযোগকারীরা যদি তার সঙ্গে এসে দেখা করেন তাহলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে বাড়ি পাওয়ার উপযুক্ত হলে তিনি সেই বাড়ি তৈরির ব্যবস্থা করে দেবেন। সামনেই পৌরসভা নির্বাচন । তার আগেই বাড়ি নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল বিজেপির রাজনৈতিক তরজা।