ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: কুড়মি আন্দোলনে ঝাঁঝ টের পেয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Abhishek Banerjee)। শালবনিতে তাঁর কনভয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে। আর তার পরই জঙ্গলমহলে প্রশাসনিক স্তরে রদবদল ঘটানো হল। সরিয়ে দেওয়া হল মেদিনীপুর রেঞ্জের DIG প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (DIG Transferred)। তাঁর জায়গায় মেদিনীপুর রেঞ্জের নতুন DIG হলেন অনুপ জয়সওয়াল (Medinipur News)। অভিষেকের কনভয়ে হামলা, এগরায় বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যুমিছিল, রদবদলের নেপথ্যে এই কারণ গুলি কাজ করে থাকতে পারে বলে জল্পনা (Kurmi Protests)।


শালবনিতে অভিষেকের কনভয়ে হামলার পাঁচ দিন পরই এই প্রশাসনিক রদবদল ঘটানো হল। তার আগে এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যুমিছিল চোখে পড়ে। এই দুই ঘটনাতেই পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়ে। জেড ক্যাটেগরি প্রাপ্ত অভিষেকের কনভয়ে হামলা হয় কী করে, গোয়েন্দা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তার পরই এই রদবদল। 


DIG মেদিনীপুর রেঞ্জে যে আধিকারিক থাকেন, তাঁর এক্তিয়ারে দুই জেলা পড়ে, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। সেখানেই সাম্প্রতিক কালে পর পর বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ এবং শালবনিতে অভিষেকের কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। তার পরই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এগরা থানার আইসি-কে সরানো হয়। এ বার DIG প্রসূনকে সরানো হল। রায়গঞ্জ রেঞ্জে পাঠানো হল তাঁকে। এতদিন রায়গঞ্জে থাকা অনুপকে আনা হল মেদিনীপুর রেঞ্জে।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘জাতীয় স্তরে একসঙ্গেই, পৃথক অবস্থান রাজ্যে’, বায়রনকে ঘিরে তুঙ্গে বিবাদ, তার মধ্যেই কংগ্রেসকে বার্তা মমতার


নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, একদমই রুটিন বদলি এটি। পারস্পরিক সম্মতিতে রদবদল হয়েছে। মাঝে মধ্যেই IPS আধিকারিকদের মধ্যে এমনটা ঘটে থাকে। কিন্তু এগরা বিস্ফোরণ এবং অভিষেকের কনভয়ে হামলার ঘটনার পর এই রদবদল মোটেই কাকতালীয় নয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ এগরায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে ক্ষমাও চেয়ে নিতে দেখা যায় তাঁকে। তাই দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে।


অভিষেকের কনভয়ে হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যেই নয়জন কুড়মি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছে কুড়মি সমাজ। তার জন্য ঝাড়গ্রামের লোধাশুলিতে বাইক র‍্যালিরও ডাক দেওয়া হয়। কুড়মি নেতাদের গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুলেছেন নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। মঙ্গলবার তিনি বলেন, "দমন-পীড়ন নীতি অবলম্বন করা ঠিক হবে না। জঙ্গলমহলে সকলের সঙ্গে আলোচনা করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের প্রতি আস্থাশীল। দমন পীড়ন নীতির বদলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত।"