শিবাশিস মৌলিক, দীপক ঘোষ, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: আর কদিন পরেই পঞ্চায়েত ভোট। এখন থেকেই ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচন নিয়ে কোমর বাঁধছে বিজেপি। সম্প্রতি বৈঠক হয়েছে। এবার চমক দিল বিজেপি। বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সদস্য করা হল মিঠুন চক্রবর্তীকে। 


কোর কমিটিতে মিঠুন:
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপিতে নতুন কোর কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই আনা হয়েছে তারকা মিঠুন চক্রবর্তীকে। এর আগে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপির তারকা প্রচারক ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারও করেছিলেন তিনি। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কমিটিতে মিঠুন চক্রবর্তী, মন্তব্য সুকান্ত মজুমদারের।


কমিটিতে আর কারা?
জাতীয় কর্ম সমিতির সদস্য হিসেবে নতুন কোর কমিটিতে রয়েছেন স্বপন দাশগুপ্ত, অনিবার্ণ গঙ্গোপাধ্যায়। রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী। কমিটিতে রয়েছেন বাংলা থেকে কেন্দ্রের চার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। মোট ২০ জনকে নিয়ে তৈরি হয়েছে এই কোর কমিটি। বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল। তাঁর অধীনে রয়েছেন তিনজন সহ পর্যবেক্ষক।

বিজেপির পঞ্চায়েত-কৌশল:
২০১৮-সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। জোর করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার থেকে ভোট ঘিরে হিংসার একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন ঘিরেও নানা সময় হিংসার অভিযোগ উঠেছে। ভোট-পরবর্তী হিংসার অভিযোগের মামলায় তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের মোকাবিলা করতে এরমধ্যেই ঘুঁটি সাহায্যে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। দেবশ্রী চৌধুরী থেকে সৌমিত্র খাঁ-বিজেপির একের পর এক নেতা তৃণমূলের মোকাবিলা করতে একের পর এক পন্থা বাতলে দিচ্ছেন। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, 'ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দেব। টি টুয়েন্টি খেলা হবে। ভাইপো আউট, কেষ্ট আউট। এবার দিদির পালা।' তৃণমূলের মোকাবিলা রুখতে তাহলে কী পন্থা নিচ্ছে বিজেপি? প্রশ্ন উঠছে সেটাই।    


সোমবারই হেস্টিংসে শেষ হয়েছে রাজ্য বিজেপির দু-দিনের বৈঠক। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জনসংযোগ বাড়াতে জেলায় জেলায় ঘুরবেন মহিলা ও যুব মোর্চার সদস্যরা। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, নারী সম্মান-সহ একাধিক ইস্যুতে সরব হবেন তাঁরা। সেই বৈঠক শেষেই, একের পর এক দাওয়াইয়ের কথা শোনা যায় বিজেপি সাংসদদের গলায়। যা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে অন্যান্য দলগুলি।


বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমরা ৫-৭ বছর ভদ্রতা করে দেখেছি, ভুল পথে আছি। ২৫০-র কাছাকাছি কর্মী মারা গেছে। যে যা কথা বোঝে, মারের পাল্টা মার চলবে। আগের দিন আলাদা ছিল, এখন আমাদের ৭৭ জন বিধায়ক।' বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'সামনে পঞ্চায়েত ভোট, শাসকদলের কর্মীরা যদি দুধ ঘোল খাওয়ায়, আমরা রসগোল্লা খাওয়াব, কিন্তু ইট ছুড়লে পাটকেল তো খেতেই হবে।' 


তৃণমূলের কটাক্ষ:
বিজেপি নেতাদের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, 'ওরা তো প্রকাশ্যে এসবই বলবে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন হবে, তৃণমূল জিতবে। ওদের জনভিত্তি নেই, তাই এইসব বলবে।'


আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন বিএড যোগ্যতাসম্পন্নরা, জানাল হাইকোর্ট