রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: বিদ্যুৎপিষ্ট (Electrocution Death) হয়ে একসঙ্গে মৃত্যু মা ও ছেলের। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri News) পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আদরপাড়ায়।দেহদুটি ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃতের নাম ননীবালা রায় ও টিঙ্কু রায়।
কী জানা গেল?
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কাল অর্থাৎ শনিবার সন্ধ্যা থেকে ননীবালা রায়ের ঘরে আলো জ্বলছিল না। রাত দশটা নাগাদ বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের কর্মীরা এসে আলোর ব্যবস্থা করে দিয়ে যান। তার পর, আজ ভোরে এই মর্মান্তিক ঘটনা। বিদ্যুৎ দফতরের টেকনিক্যাল ইনচার্জ জয়দীপ দাস বলেন, 'গত কাল রাতে আমরা ওঁদের কমপ্লেন পেয়ে এসেছিলাম। ওঁদের বাড়িতে আলোও জ্বালানোরও ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁদের ঘরে সরু তার দিয়ে বিদ্যুতের লাইন করা ছিল। তা ছাড়া, এখন প্রবল বৃষ্টি চলছে যার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা। প্রাথমিক ভাবে সেটাই মনে করা হচ্ছে।' এলাকায় এমন মৃত্যুতে প্রতিবেশি হৃষিকেশ বর্মন বলেন, 'গত কাল রাতে বিদ্যুৎ অফিসের লোকেরা এসেছিলেন। ওঁরা লাইনটা ডিরেক্ট করে দিয়ে গিয়েছিলেন। সে কারইে জন্যই আজ দুটি প্রাণ চলে গেল।' জলপাইগুড়ির এই ঘটনা বছর পাঁচেক আগেকার অন্য একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে অনেককেই। সেখানে মাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হয় ছেলেরও। খাস কলকাতায় ঘটনাটি ঘটে।
আগেও এক ঘটনা...
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে লোহার তারে কাপড় মিলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিলেন মা। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ছোট ছেলে। হরিদেবপুর থানা এলাকার শরৎচন্দ্র রোডের ওই ঘটনা ঘিরে সেই সময়ও তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছিল। মৃতদের নাম, পুষ্প সামন্ত ও মনোজিৎ সামন্ত। পরিবার সূত্রে খবর, কিশোর ছেলেকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে ছিলেন মা। স্বামী ও বড় ছেলে গিয়েছিলেন বাইরে। প্রতিবেশীদের দাবি, হঠাত্ তাঁরা দেখতে পান, গায়ে লোহার তার জড়ানো অবস্থায় বাড়ির বাইরে কুয়োর কাছে পড়ে রয়েছে মা-ছেলের মৃতদেহ। পরিবার ও প্রতিবেশীদের অনুমান, কাপড় মিলতে গিয়ে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হওয়া মা-কতে বাঁচাতে গিয়েই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়েছে ছোট ছেলে। তবে, এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা যে খুব বিরল নয় সেটির নজির আরও রয়েছে। গত বছর অক্টোবরেই যেমন পশ্চিম মেদিনীপুরে হাইটেনশনের ছেড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একসঙ্গে মারা যায় বাবা-ছেলে। জানা যায়, জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন বাবা দুলাল কর। সন্ধের পরও বাবাকে ফিরতে না দেখে তাঁর খোঁজে যান ছেলে বিষ্ণুপদ। বাবাকে পড়ে থাকতে দেখে ছুটে গিয়েছিলেন ছেলে। কিন্তু অদৃষ্টে ছিল অন্য কিছু। বাবাকে তুলতে গিয়ে ছেলেও বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন বলে দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন:আইসিসিইউ-র বেড থেকে রক্ত বিক্রি ! সাগর দত্ত হাসপাতালে দালালরাজের অভিযোগ মদন মিত্রর