ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: হঠাৎ দিল্লিতে মুকুল রায় (Mukul Roy)। দিল্লি বিমানবন্দরে (Delhi Airport) মুকুল রায়ের ছবি ভাইরাল (Viral)। সন্ধ্যার বিমানে ২ সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লিযাত্রা মুকুলের। ছেলেকেও না জানিয়ে দিল্লি গেলেন মুকুল! হঠাৎ কাউকে না জানিয়ে কেন দিল্লি গেলেন মুকুল?  বাবার খোঁজে পুলিশের দ্বারস্থ মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু। 


ভাইরাল ভিডিওতে মুকুলকে বলতে শোনা যায়, 'দিল্লিতে দরকার আছে, আসতে পারব না? অসুস্থতা নয়, এমনই এসেছি। আমি তো এখানের এমএলএ, এমপি, না আসার তো কোনও কারণ নেই। কোনও বিশেষ কারণে আসিনি। দিল্লিতে আসলে ডাক্তার তো দেখাতেই হয়। হঠাত করে নয়, দিল্লিতে আমি মাঝে মধ্যেই আসি। এবার আসতে একটু দেরি হল এই যা। যে ক'দিন দরকার হব সে ক'দিন থাকব।' 


জানা গিয়েছে, সন্ধ্যার বিমানে ২ সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লিযাত্রা মুকুলের। গতকাল সন্ধে পৌনে ৭টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছন মুকুল রায়। নিরাপত্তারক্ষীদের বাইরে রেখে ২ জনকে নিয়ে ঢুকে যান ভিতরে। ইন্ডিগোর বিমানে মুকুলের ফ্লাইট নম্বর ছিল 6 E898। কিছুক্ষণ পর, বিমানবন্দরে হাজির হন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। বাবাকে বিমান থেকে নামিয়ে দিতে থানায় লিখিত অনুরোধ করেন শুভ্রাংশু। কিন্তু ততক্ষণে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয় ইন্ডিগো-র বিমান, খবর সূত্রের। রাত পৌনে ১০টা নাগাদ দিল্লিতে নামে বিমান। রাত ১০টা নাগাদ দিল্লি বিমানবন্দর থেকে বেরোতে দেখা যায় মুকুল রায়কে।  


এদিকে, কোথায় গেলেন মুকুল রায়? এই জল্পনার মধ্যেই অনুপম হাজরার ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট। ফেসবুক পোস্টে বিজেপি নেতা শুধু লেখেন, প্রত্যাবর্তন। কী বলতে চেয়েছেন অনুপম হাজরা? তা নিয়ে ফের তৈরি হয়েছে রহস্য। 


অন্যদিকে, মুকুল রায় এর নিখোঁজের বিষয়ে বলেন, 'নিখোঁজ অনেকদিন আগেই হয়েছেন। ছয় মাসের মধ্যে দেখুন ওর কোন খবর আছে। উনিতো একজন এমএলএ আছেন। বাংলার রাজনীতিতে খুব বড় ব্যক্তিত্ব উনি নেতা কেন কোন খবর নেই। আমার মনে হয় এটা লস্ট কেস। মুকুল রায় কে নিয়ে কেউ চিন্তা করে না আর।' 


আরও পড়ুন, যতদিন আয়ের সুযোগ আছে, ততদিনই MLA-MP'রা দিদির সঙ্গে আছেন, দাবি দিলীপের


এদিকে বাবার খোঁজ পেয়ে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু বলেন, 'মুকুল রায়ের মানসিক পরিস্থিতি ঠিক নয়। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারবেন না। মুকুল রায় মানসিক ভাবে সুস্থ নয়। একজন অসুস্থ মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদনাম করার জন্য রাজনীতি করা হচ্ছে'। 


শুভ্রাংশু এও বলেন, 'বাবাকে বিমানবন্দর থেকে ফেরাতে চেষ্টা করেছিলাম। সিআইএসএফ কোনওরকম সাহায্য করেনি। বাবার দিল্লিযাত্রার পিছনে বড় কোনও টাকার খেলা হয়েছে। আমাকে না জানিয়েই ২ সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লি গেছেন বাবা। মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে, বাবা সুস্থ নয়। কাল মুখ্যমন্ত্রী নিজে ২ বার বাবার খবর নিয়েছেন। একজন সুস্থ মানুষের বিজেপিতে যোগদান আর অসুস্থ মানুষের বিজেপিতে যোগদানে পার্থক্য আছে।'


এরপরই মুকুল-পুত্র বলেন, 'কাল কোনও এজেন্সি একটি ছেলের মাধ্যমে বাবার হাতে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাবার এখন মাসিক আয় ২১ হাজার টাকা। সুতরাং তাঁর দিল্লি যাওয়া ও সঙ্গীদের খরচ বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। একজন অসুস্থ মানুষকে কোনওদলে যোগদান করাতেই পারে। ২০২১ সালেও মুকুল রায় বিজেপিতে ছিলেন, তাতে তৃণমূলের কোনও ফারাক পড়েনি। বাবার ফোনের সুইচ অফ, কেউ ফোন নিয়ে নিয়েছে কিনা জানি না'।