সুনীত হালদার, পূর্ণেন্দু সিংহ ও অরিত্রিক ভট্টাচার্য, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর: ৫০ ঘণ্টা পার। কুড়মি আন্দোলনের ঝাঁঝ ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। কুড়মি সম্প্রদায়কে তপশিলি উপজাতিভুক্তদের আওতায় আনতে হবে। সারনা ধর্মের স্বীকৃতি দিতে হবে। কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এমনই একাধিক দাবিতে রাজ্য়ের পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে চলছে লাগাতার আন্দোলন। পশ্চিম মেদিনীপুর-পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য় শুরু হয়েছে রেল-সড়ক অবরোধ।



পুরুলিয়া
আজ আন্দোলনের তৃতীয় দিন। নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে অনড় কুড়মি সম্প্রদায়। আন্দোলনের জেরে আজও পুরুলিয়ার আদ্রা ডিভিশনে বিপর্যস্ত ট্রেন চলাচল। চরম সমস্য়ায় পড়েছেন যাত্রীরা। আদ্রা ডিভিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ইতিমধ্যে আদ্রা পুরুলিয়া শাখার ৫৮ টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ৪টি ট্রেনের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। এরইমধ্য়ে কুড়মি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবি পূরণ না হলে, রবিবার থেকে পুরুলিয়া-রাঁচি রেলপথের কোটশিলা স্টেশন ও পুরুলিয়া-রাঁচি জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।

পশ্চিম মেদিনীপুর
আদিবাসী কুড়মি সমাজের আন্দোলন ঘিরে অবরুদ্ধ পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। আজ সকালে প্রথমে জাতীয় সড়কে মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর খেমাশুলি স্টেশনে শুয়ে পরে শুরু হয় তাঁদের বিক্ষোভ কর্মসূচি।

ট্রেন বন্ধের তালিকা 
কুড়মি আন্দোলনের জেরে বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ দূরপাল্লার ট্রেন। সেই তালিকায় রয়েছে,


 



  • পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেস

  • হাওড়া-চক্রধরপুর এক্সপ্রেস

  • হাওড়া-বোকারো স্টিল সিটি এক্সপ্রেস

  • বোকারো স্টিল সিটি-রাঁচি প্য়াসেঞ্জার স্পেশাল

  • খড়গপুর-রাঁচি মেমু স্পেশাল

  • আনন্দবিহার-ভূবনেশ্বর এক্সপ্রেস

  • ভাস্কো-দা-গামা-জসিডি এক্সপ্রেস

  • সেকেন্দ্রাবাদ-পটনা স্পেশাল

     




 


কুর্মি আন্দোলনের জেরে বিপর্যন্ত রেল পরিষেবা। আজ হাওড়া থেকে বাতিল প্রায় ৭০টি এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন। বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ঘুরপথে চালানো হচ্ছে অনেক ট্রেন। চরম ভোগান্তির শিকার রেলযাত্রীরা। 


কুর্মি আন্দোলনের জেরে পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে ভয়ঙ্কর রেল ভোগান্তি। আর তার আঁচ এসে পড়ল হাওড়ায়। একের পর ট্রেন বাতিল। চরম নাকাল হতে হল সাধারণ মানুষকে! শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ। তাই চিকিৎসার জন্য় মুম্বইয়ের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ট্রেন অবরোধের জেরে এখনও যাওয়াটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ক্য়ান্সার রোগীর। 


পরপর এত ট্রেন বাতিল হয়ে যাওয়ায় চাপ বাড়ছে এনকোয়ারিতে। শুধু যে হাওড়াতেই এই দুর্ভোগ, তা নয়। একই ছবি বাঁকুড়াতেও। 
কেউ বাড়ি থেকে বেরিয়ে পৌঁছতে পারলেন না গন্তব্য়ে। কেউ আবার ফিরতে পারলেন না। তবে, এরইমাঝে, মারাত্মক বিপদে পড়েছেন পর্যটকরা। 


যেমন, গত ৩ এপ্রিল, হাওড়ার সালকিয়া থেকে ৫০ জনের একটি দল মহারাষ্ট্রের সাঁইনগর এবং নাসিক বেড়াতে গেছিলেন। কিন্তু একের পর এক ট্রেন বাতিলের জেরে ফিরতে পারছেন না তাঁরা। এদিকে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায়, হোটেল ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রমে। এদিকে চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে পর্যটকদের পরিজনরা। কুড়মি আন্দোলনের জেরে শুক্রবার হাওড়া থেকে বাতিল করা হয়েছে প্রায় ৭০টি ট্রেন। 


সেই তালিকায় রয়েছে,



  • আনন্দ বিহার - ভুবনেশ্বর এক্সপ্রেস

  • পুরুলিয়া - হাওড়া এক্সপ্রেস

  • হাওড়া চক্রধরপুর এক্সপ্রেস

  • হাওড়া বোকারো স্টিল সিটি  

  • বোকারো স্টিল সিটি - রাঁচি প্য়াসেঞ্জার স্পেশাল 

  • ধানবাদ - টাটানগর এক্সপ্রেস

  • আসানসোল - টাটানগর   

  • টাটানগর - দানাপুর  

  • হাওড়া বারবিল জন শতাব্দী এক্সপ্রেস

  • নিউ দিল্লি - পুরী এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন। 



রেল সূত্রে খবর, শনিবারও বাতিল করা হয়েছে ১৫টি ট্রেন। তারমধ্য়ে রয়েছে



  • হাওড়া-চক্রধরপুর  

  • হাওড়া বোকারো স্টিল সিটি  

  • হাওড়া বারবিল জনশতাব্দী  

  • আমদাবাদ - হাওড়া

  • পুণে - হাওড়া দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন। 

  • রবিবার বাতিল রয়েছে যোগ নগরী ঋষিকেশ - পুরী এক্সপ্রেস। 


এ ছাড়া বেশ কিছু ট্রেনের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। কিছু রুট সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।