প্রকাশ সিনহা, মধ্যমগ্রাম: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) রাজভবন অভিযানের দিনই খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ইডি (ED)। রথীন ঘোষের (Rathin Ghosh) মাইকেলনগরের বাড়িতে ইডি আধিকারিকরা। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চলছে তল্লাশি। এর আগে তদন্তে বারবার উঠে এসেছিল রথীন ঘোষের নাম। রথীন ঘোষের বাড়ি ছাড়াও আর এক ডজন ঠিকানায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। 


খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ইডি: পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তৎপর ED। সাতসকালে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের মাইকেল নগরে বাড়িতে হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম কোনও মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চলছে। রাজ্যজুড়ে ১২টি জায়গায় একাধিক পুরসভার চেয়ারম্যান ও পুর আধিকারিকদের বাড়িতেও চলছে তল্লাশি। রথীন ঘোষের পাশাপাশি, কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা, বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক, দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্তর বাড়িতেও তল্লাশি চলছে। এদিন সকাল ৬টা নাগাদ খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হানা দেয় ED। মধ্যমগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক রথীন ঘোষ মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান। ED-র দাবি, পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অয়ন শীলের সংস্থা ABS ইনফোজোনের অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখে রথীন ঘোষের নাম বারবার উঠে এসেছে। ২০১৪-২০১৮ পর্যন্ত পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনের তথ্যের ভিত্তিতেই এই অভিযান। টাকা কাদের কাছে পৌঁছেছে, কীভাবে পৌঁছেছে, সেই মানি ট্রেল খুঁজে বের করাই ED-র উদ্দেশ্য। গতকাল রাত ৩টে নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে নেওয়া হয় ED-র অফিসারদের। ৮০ জন ED অফিসারকে একাধিক দলে ভাগ করে ভোর থেকে শুরু হয়েছে ম্যারাথন তল্লাশি। 


পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত মালে উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক পুরসভার কর্মী ও আধিকারিকদের তলব করা হয়। সূত্রের খবর, বরানগর, কামারহাটি, পানিহাটি, উত্তর দমদম, দক্ষিণ দমদম-সহ যে সমস্ত পুরসভায় এর আগে সিবিআই অভিযান চালিয়েছিল, সেই সমস্ত পুরসভার কর্মী ও আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান রেকর্ডের প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় এজেন্সি শুরু করছে বলে জানা যায়। মূলত ২০১৪ সালের পর থেকে যে সমস্ত নিয়োগ হয়েছে, তা নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে ঠিক হয়। কোন কোন পদে নিয়োগ হয়েছে, কীভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলেছে, কারও নির্দেশে নিয়োগ হয়েছিল কি না এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন প্রস্তুত করে ইডি।


FIR করার পরে গত ৭ জুন প্রথম সিবিআই তল্লাশি অভিযান করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মজদুর, ক্লার্ক, পিয়ন, অ্য়াসিস্ট্যান্ট থেকে শুরু করে ড্রাইভার- সর্বত্র টাকার বিনিময়ে নিয়োগের অভিযোগ। ২০১৪ সালের পর থেকে এই পুরসভাগুলিতে কীভাবে নিয়োগ হয়েছে। কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল কি না, কী পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধাপে বাছাই হয়েছে। কোন কোন প্রার্থীকে বাছাই করে হয়েছিল সেটা কীসের ভিত্তিতে বাছাই করা হয়েছিল, কী প্রক্রিয়ায় গোটা নিয়োগ হয়েছিল, বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় কারা জড়িত ছিলেন সবই খুঁজে দেখছেন সিবিআই আধিকারিকরা। আর এবার পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম কোনও মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে ইডি।


আরও পড়ুন: Udaynarayanpur Flood: জলের তলায় উদয়নারায়ণপুর কমপক্ষে ১৫টি গ্রাম, তৈরি ১৯টি ত্রাণশিবির