আবীর দত্ত, কলকাতা : রেশন বণ্টন দুর্নীতির (Ration Distribution Scam) পাশাপাশি পুর নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তেও তৎপর ED। গতকালের পর আজও সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন IAS জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্য়ায়। গতকাল তাঁকে দু'দফায় প্রায় সোয়া ন'ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। এদিন সিজিও কমপ্লেক্সে (CGO Complex) হাজিরা দেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাচু রায়ও। 


২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের ডিএলবি-তে ছিলেন জ্যোতিষ্মান। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Municipality Recruitment Scam) গত ৫ অক্টোবর সল্টলেকের শ্রাবণী আবাসনে ওই IAS অফিসারের বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চলে। প্রসঙ্গত, ওই দিনই দক্ষিণ দমদম পুরসভায় (South Dumdum Municipality) সেখানকার ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্ত, এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাচু রায়ের বাড়িতেও হানা দেয় ED।


প্রসঙ্গত, গত ৫ অক্টোবর পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে, জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্য়ায়ের সল্টলেকের ফ্ল্য়াটে ১৭ ঘণ্টা ম্য়ারাথন তল্লাশি চালায় ইডি। জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় তাঁকে। পাশাপাশি খাদ্য়মন্ত্রী ও মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্য়ান রথীন ঘোষের বাড়ি, সাতজন প্রাক্তন ও বর্তমান চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও এক পুরকর্মীর বাড়ি এবং মধ্যমগ্রাম পুরসভা, দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি ও কাঁচরাপাড়া পুরসভাতে ম্য়ারাথন তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপর কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি।


ED সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, গত ১৯ মার্চ প্রোমোটার অয়ন শীলের সংস্থা ABS ইনফোজোনের সল্টলেকের অফিসের কম্পিউটারের ফোল্ডারে যে নথি পাওয়া গিয়েছিল, সেখানেই ছিল একাধিক প্রভাবশালীর নাম। উল্লেখ করা ছিল চাকরি বিক্রির টাকার অঙ্কও! আদালতে অয়ন শীলের অফিসকে ডেটা মাইন বা তথ্যের খনি বলে উল্লেখ করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।পুর নিয়োগ দুর্নীতির ব্যাপ্তি বোঝাতে গিয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে উঠে আসে বিশ্বের সর্বোচ্চ বহুতল বুর্জ খলিফার প্রসঙ্গ।


গত ২১ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে প্রয়োজনে FIR দায়ের করে তদন্ত করতে পারবে CBI। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়। সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়ে ওই মামলা হাইকোর্টে ফেরত পাঠায়। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে এই মামলা বিচারপতি অমৃতা সিন্হার এজলাসে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু হাকিম বদলালেও হুকুম বদলায়নি। ১২ মে, বিচারপতি অমৃতা সিন্হা জানিয়ে দেন, পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে করবে সিবিআই।


আরও পড়ুন- ইডি দফতরের সেলে থাকার আলাদা ব্যবস্থা, সকাল থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে টানা জেরা