রাজীব চৌধুরী, প্রদ্যোৎ সরকার ও দীপক ঘোষ, মুর্শিদাবাদ: উপনির্বাচনে (By Poll Election) হারের ধাক্কার মধ্যেই আরও অস্বস্তিতে বিজেপি (BJP)। রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বরে একাংশকে তোপ দেগে দলীয় পদ ছাড়লেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বিধায়ক-সহ ৩। বিক্ষোভের সুর বহরমপুরের (Baharampur) বিজেপি বিধায়কের গলাতেও। ক্ষোভ উগরে অব্যহতি চাইলেন নদিয়ার (Nadia) ১০ নেতা। কেন এই অবস্থা? প্রশ্ন তুলেছেন অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। আর এ নিয়েই তুঙ্গে উঠেছে তরজা। 


আসানসোল (Asansol) ও বালিগঞ্জের (Baliganj) উপনির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে, ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। এর মধ্যে বঙ্গ বিজেপিতে (BJP) ফের বিদ্রোহের সুর। জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ।


একই ইস্যুতে বিদ্রোহী বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। পদত্যাগ করেছেন রাজ্য কর্মসমিতির দুই সদস্য বাণী গঙ্গোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর চৌধুরী। অন্যদিকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দিলেন বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার ১০ পদাধিকারি। 


পদত্যাগ করেছেন বিজেপির (BJP) রাজ্য দফতরের লাইব্রেরির দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন রাজ্য সহ সভাপতি দেবাশিস মিত্র। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) সাংগঠনিক স্তরে রদবদল করে বিজেপির (BJP) জেলা নেতৃত্ব। এরপর রবিবার জেলার কয়েকজন বিক্ষুব্ধকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ২ বিদ্রোহী বিধায়ক। 


বিজেপি বিধায়ক ও পদত্যাগী রাজ্য সম্পাদক গৌরীশঙ্কর ঘোষের কথায়, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর প্রতিটি নির্বাচনে এই অদক্ষ লোকেদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় নির্বাচনে আমরা পরাজয় স্বীকার করেছি, সংগঠনের রাজ্য নেতারা নিচুতলার কর্মীদের গুরুত্ব দিচ্ছে না, তাই যোগ্য লোকদের বসিয়ে রেখে অযোগ্যদের পদে বসানো হয়েছে।


মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তোলেন তাঁরা। 


বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, উনি কী করে জানলেন যে মণ্ডল সভাপতি ওনার কথা মতো হয়নি। এখন তো ঘোষণাই হয়নি। আমরা সব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পাঠিয়ে দিয়েছি।


নবাবের জেলার পাশাপাশি বিদ্রোহের আঁচ লেগেছে পড়শি জেলা নদিয়াতেও।সজেলা সভাপতির ওপর ক্ষোভপ্রকাশ করে, পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার ১০ পদাধিকারি। 


নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি (BJP)  সহ সভাপতি বিপদভঞ্জন কাঞ্জিলালের দাবি, গুরুত্বহীন করে রেখেছেন জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস, পুরভোটে নিজের মতো করে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছিল, এরফলে দলের ক্ষতি হচ্ছে।


নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের কথায়, দলের কোনও ক্ষতি হবে না, কারণ সামনে কোনও নির্বাচন নেই, প্রয়োজনে নতুন কমিটি তৈরি করা হবে।


শনিবার উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর রাজ্যের বর্তমান নেতৃত্বকে তোপ দাগেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তাঁর কটাক্ষ, অপরিণত লোকেরা মাথায় থাকলে হয় না। আমাদের দলে অপরিণত লোকেরা মাথায় রয়েছে। তাদের সরাতে হবে। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা আর ভোটে জেতার মধ্যে ফারাক আছে।


আরও পড়ুন: West Bengal: দেশে টেলি মেডিসিনে ‘দ্বিতীয়’ বাংলা, নতুন নজির স্বাস্থ্য দফতরের


আর রবিবার বিজেপির একাধিক পদাধিকারী পদত্যাগ করায়, প্রশ্ন তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন আরেক বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। 


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, একটা মণ্ডল চালাতে হয় কীভাবে তার অভিজ্ঞতা নেই, তাঁকে রাজ্যের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে বিজেপিতে বিদ্রোহের সুর ক্রমশ জোরাল হচ্ছে।