রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: কথায় বলে জন্ম,মৃত্যু ও বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে। সারাদিনের ঘটে চলা হাজার-লক্ষ জিনিসের মধ্যে এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলা। স্বামীর মৃত্যুতে শোক সামলাতে পারলেন না স্ত্রী। মৃত্যুকালীন স্বামী শঙ্কর মণ্ডলের বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। বয়সে অনেকটাই ছোট ছিলেন স্ত্রী নিয়তি মণ্ডল (৬৮)।  স্বামীর মৃত্যুর পর, তাঁর বুকে রাখতেই অবাক করা ঘটনা ! স্বামীর মৃত্যুর তিন মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হল স্ত্রীর। 


ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী মুর্শিদাবাদ


সোমবার রাতে মুর্শিদাবাদ জেলা ভরতপুর থানার ভোলতা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় গ্রামের সকলেই আশ্চর্য্য ও অবাক হচ্ছেন।মৃত দম্পত্তির এক ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে অনেক আগেই হয়েছে। এখন তাঁদের ভরা সংসার। নাতি ও নাতনিও রয়েছে। এই চাষী পরিবারের সঙ্গে গ্রামের সকলেরই সুসম্পর্ক রয়েছে।মৃতদের পরিবার ও প্রতিবেশিদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচদশক আগে ওই দম্পত্তির বিবাহ হয়েছিল।  বৃদ্ধ শঙ্কর মণ্ডল দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ ছিলেন। শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ছিল তাঁর। কয়েকদিন আগে তাঁকে ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনাও হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি।


আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রীর আসার আগে ধনধান্য অডিটোরিয়ামে ভাঙল তোরণ , এসএসকেএমে ভর্তি আহতরা..


মৃত স্বামীর বুকে মাথা রাখার ৩ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু স্ত্রীর !


প্রায় ৬ দিন শয্যাশায়ী অবস্থায় কাটানোর পর সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরেই পরিবারে কান্নার রোল উঠে। স্ত্রী স্বামীর বুকে মাথা রেখে ডুকরে কেঁদে ফেলেন। কিন্তু তিন মিনিটের মাথায় তিনি চুপচাপ হয়ে পড়লেন। তা দেখে মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশীরা তাঁকে ডাকাডাকি করতেই নিথর দেহ হেলে স্বামীর দেহের পাশে পড়ে গেল। গ্রামের এক চিকিৎসক নাড়ি দেখে বললেন,' স্বামীর সাথে স্ত্রীরও মৃত্যু হয়েছে। স্বামীর মৃত্যু শোক বোধহয় সামলাতে না পেরে স্ত্রীও মারা গিয়েছে।' মঙ্গলবার সকালে গ্রামের মানুষ দুইজনের দেহ পাশাপাশি রেখে শ্মশানের দিকে রওনা দেয়। দুটি দেহ সাটুইগ্রামের শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুইজনের দেহ পাশাপাশি রেখেই শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।