রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: গ্রাহক সেজে ব্যাঙ্কে প্রবেশ। তার আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকা লুঠ (Bank Dacoity)। কিন্তু বস্তাভর্তি টাকা নিয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন আর পূরণ হল না। বরং পালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন দুষ্কৃতীরা। তাঁদের মধ্যে এক জন এখনও অধরা। এর পিছনে বড় কোনও চক্র জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের (Murshidabad News)। ফারাক্কা জুড়ে চলছে নাকা-তল্লাশি (Farakka Bank Dacoity)। 


গ্রাহক সেজে ঢুকে ব্যাঙ্ক ডাকাতি


বুধবার দুপুরে এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। আর তার এক ঘণ্টার মধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয় (Bank Dacoity Accused Arrested)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাহক সেজে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখায় ঢোকেন চার জন। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকা ব্যাগে করে ভরতে থাকেন। ব্য়াঙ্কের ম্যানেজার, কর্মী, গ্রাহক, সকলে ভিতরে থাকাকালীনই শাটার নামিয়ে চলে তাণ্ডব। ব্যাঙ্ক কর্মী এবং গ্রাহকদের মাথায় বন্দুক তাক করে ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ।


এর পর বস্তাভর্তি টাকা নিয়ে ব্যাঙ্ক ছেড়ে পালাতে উদ্যোগী হন দুষ্কৃতীর দল। সেই মতো বাইরে দাঁড় করানো দুই মোটর সাইকেলে চেপে চম্পট দেন তাঁরা।  এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার যে ফুটেজ সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, একটি মোটর সাইকেলে দু'জন বসে রয়েছেন আগে থেকেই। দৌড়ে এসে পিছনে উঠে পড়েন তৃতীয় এক জন। কিন্তু টাল সামলাতে না পেরে মোটর সাইকেল থেকে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "এক জন পড়ে গিয়েছিল। অস্ত্র বার করে ভয় দেখায়। পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে।"


 



আরও পড়ুন: Nadia Rape: হাঁসখালিতে গণধর্ষণ, খুনের অভিযোগে এফআইআর সিবিআই-এর । Bangla News


রাস্তায় পড়ে যাওয়া ওই ব্যক্তিকে ধরতে গেলে হাত ফস্কে বেরিয়ে যান তিনি। তিলডাঙা হয়ে ঝাড়খণ্ড সীমানার দিকে ধেয়ে যান। তাঁরা ঝাড়খণ্ড সীমানার দিকে পালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। কয়েক কিলোমিটার ধাওয়া করে মোটর সাইকেল সমেত তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বস্তা ভর্তি টাকা। দু'টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং মোটর সাইকেল দু'টিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। 


বড় চক্র কাজ করছে বলে অনুমান পুলিশের


কিন্তু এ দিন, চার জন মিলে ব্যাঙ্কে ডাকাতি করতে ঢুকেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই তিন জন ধরা পড়লেও, এক জন এখনও অধরা বলে জানা গিয়েছে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ, চার জন নয়, এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। সেই মতো ফারাক্কা জুড়ে যেমন তল্লাশি চলছে, তেমনই পার্শ্ববর্তী মালদা, ঝাড়খণ্ড সীমানা সংলগ্ন এলাকাতেও তল্লাশি চলছে। 


ভরদুপুরে এমন ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ঠিক কতটাকা লুঠ করা হয়েছিল, এখনও নির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি। এ দিনের ঘটনায় হতভম্ব ব্যাঙ্কের কর্মীরা। সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি তাঁরা। ডাকাতদল পালিয়ে যাওয়ার পরও ব্যাঙ্কের কর্মী, গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক থেকে বাইরে বেরোতে দেয়নি পুলিশ। তাঁদের জেরা করে তবেই ছাড়া হবে হবে বলে জানা গিয়েছে।