রাজীব চৌধুরী,মুর্শিদাবাদ:  পুজোর (Durga Puja 2022) মুখে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সামশেরগঞ্জে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। আজ সকাল থেকে প্রতাপগঞ্জ এলাকায় গঙ্গার পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে কয়েক বিঘা চাষের জমি, বাগান। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা বাড়ির  ইট, কাঠ খুলে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন। মাসখানেক ধরেই প্রতাপগঞ্জ-সহ সামশেরগঞ্জে গঙ্গায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন-পরিদর্শনে এসে সম্প্রতি বিক্ষোভের মুখে সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। ভাঙন-রোধ নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


সেপ্টেম্বরের শুরুতে সামশেরগঞ্জে গঙ্গায় ভয়াবহ ভাঙন চলে। তলিয়ে যায় সেসময়, একাধিক বাড়ি। শিবপুর গ্রামজুড়ে হাহাকার পড়ে যায়। বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে, আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা ভিটে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়ায় মানুষের মনে। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে ভাঙন আতঙ্ক যেন কাটছেই না। বোগদাদনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রতাপগঞ্জ গ্রামে গঙ্গা ভাঙ্গন শুরু হয় মাসের শুরুতে। তলিয়ে যায় দুটি বাড়ি। আরও বেশ কিছু বাড়ি যে কোনও সময়ে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় সেসময়। একদিকে জলপাইগুড়ির বানারহাট, অন্যদিকে মালদার রতুয়া, ভেসে যায় গ্রামের পর গ্রাম। টানা বৃষ্টি হয় সেসময় ভুটান পাহাড় ও ডুয়ার্সে। ফুঁসে ওঠে ডুডুয়া, জলঢাকা, কালুয়া, আংরাভাসা নদী। জলবন্দি হয়ে পড়ে দেড়শোরও বেশি পরিবার। টানা বৃষ্টি ঘুম কেড়ে নেয় মালদার রতুয়ার বাসিন্দাদেরও। বিপদসীমা পেরিয়ে যায় গঙ্গা। পাল্লা দিয়ে বাড়ে ফুলহারের জলস্তরও। রুহিমারি, গঙ্গারামটোলা, সম্বলপুর, কোতুয়ালি-সহ প্রায় ২০টি গ্রাম জলের তলায় যায় সেসময়। এবারও সেই আতঙ্কই ফের ফিরল পুজোর মুখে।  


আরও পড়ুন, তৃণমূল সরকার চাকরি দেবে না, দিলে আদালত দেবে : দিলীপ ঘোষ


তবে শুধুই মুর্শিদাবাদ নয়, গঙ্গায় ভয়াবহ ভাঙন অগাস্ট মাসের শেষে চলে মালদাতেও। সেসময় সাত কোটি টাকা ব্যয় করে মালদার মানিকচকের ভুতনি চর এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ করে রাজ্য সেচ দপ্তর। কিন্তু তারপরও ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হয়নি। মুহূর্তের মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি গাছপালা সব। ভিটে মাটি হারানোর আতঙ্কে এলাকার বাসিন্দারা।   সেবার রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে গ্রামবাসীরা জানান, 'বালির বস্তা দিয়ে কিছু হবে না। স্থায়ী বাঁধ তৈরি করতে হবে। তাঁরা বলেন, বালির বস্তা ফেলে কাজ হচ্ছে।  প্রতি বছর বন্যার সময় এভাবে কোটি কোটি চাকার কাজ হয়, কিন্তু লাভ কিছু হয় না।  এইরকম চলতে তাকলে ভূতনি এলাকা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।  আমরা চাই স্থায়ী বাঁধ তৈরি হোক। অপর এক বাসিন্দা বলেন, প্রতিবছর মাত্র দু -চারজন ঠিকাদার ঘুরে পিরে কাজ পায়। ভাঙন রোদে কাজের কাজ কিছুই হয় না। সব টাকা লুঠ হয়।'