রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: একদিকে মঞ্চে উপস্থিত না থাকায় ব্লক সভাপতিকে সতর্ক করলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। অন্যদিকে তাঁদের এলাকায় অনুষ্ঠান হলেও, আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগ তুললেন আরেক বিধায়ক ও ব্লক সভাপতি। গোটা ঘটনায় মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের দ্বন্দ্ব!
ভরতপুরের তৃণমূল (TMC) কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir) বলেন, এখানকার মাদারের সভাপতি, তাঁকেও অনুরোধ করব, আপনি যদি রাজনীতির মঞ্চে টিকে থাকতে চান, প্রতিযোগিতা করুন, সেই প্রতিযোগিতা কাউকে টেনে নামানোর প্রতিযোগিতা নয়। মুর্শিদাবাদে ফের তৃণমূল বনাম তৃণমূল! অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকায়, এক ব্লকের সভাপতিতে কার্যত সতর্ক করে দিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। আমন্ত্রণ পাননি বলে পাল্টা দাবি করেছেন ব্লক সভাপতি। তাঁকে না জানিয়েই, এলাকায় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA)।
শনিবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ভরতপুরের বুন্দরিয়ায় সভার ডাক দিয়েছিল, ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল, সেটি বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। যেখনে উপস্থিত ছিলেন পাশের বিধানসভা কেন্দ্র, ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। অথচ মঞ্চে দেখা যায়নি এলাকার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। শুধু তিনি নন, অনুষ্ঠানে ভরতপুর এক দক্ষিণ ব্লকের সভাপতি নজরুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও, ছিলেন না উত্তর ব্লকের সভাপতি সঞ্জয় সরখেল। যে কারণে প্রথমে মঞ্চ থেকে ও পরে সংবাদমাধ্যমের সামনেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিধায়ক।
ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের কথায়, বিধায়ক অনেক ব্যস্ততম বিধায়ক, অনেক কাজে আছে, তাই হয়ত আসেননি। ব্লক সভাপতি কেন আসেননি সেটার ব্যাখ্যা আমি দেব না, আরেকজন ব্লক সভাপতি আছেন নজরুল ইসলাম, তিনিই ভাল বলতে পারবেন, তাঁর সহকর্মী কেন আসেননি। উল্টোদিকে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও ভরতপুর ১ নম্বর উত্তর ব্লকের সভাপতির দাবি, এলাকায় যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তা তাঁদের জানানোই হয়নি।
বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার কথায়, আমি বিধানসভায় আছি, আমার সঙ্গে কথা বলেননি, ব্লক সভাপতির সঙ্গে কথা বলেননি। না বলে অনুষ্ঠান ঠিক করেছেন। ভরতপুর ১ উত্তর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সঞ্জয় সরখেল বলছেন, 'আমিও ব্যস্ত ছিলাম, আমাকে হয়ত জানানোর সময় পায়নি। প্রশ্ন- একটা প্রোগ্রাম না কি আপনি করেননি। উত্তর- ওসব ফালতু কথা। আমাকে যেহেতু জানায়নি, তাই হয়তো লোকজন হয়নি। লোকজন কম হয়েছে বলে এসব বলছে।
বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়ের কথায় , কোন কাজকে নিয়ে বা কারও অনুপস্থিতি নিয়ে কোন উল্টো পাল্টা কথা বলা ঠিক নয়। আমি দেখে নিচ্ছি কি ঘটনা ঘটেছে, আমার কাছে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ নেই, আমি বিস্তারিত জেনে নিয়ে তারপর নিশ্চয় একটা আলোচনা করব।
গত ২৯ অক্টোবর সালারে, হুমায়ুন কবীরের ঘনিষ্ঠ অঞ্চল সভাপতিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে! এবার বিধায়কের অনুষ্ঠানের ব্লক সভাপতির গরহাজিরা নিয়ে ফের সামনে চলে এল শাসকদলের কোন্দল!! পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ফাটল বোজাতে পারবে তৃণমূল?