জয়দীপ হালদার, কাকদ্বীপ: মাছের সন্ধানে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন কাকদ্বীপের (kakdwip) ইয়াসিন শেখ। তার পর টানা ১১ দিন কেটে গিয়েছে। হঠাৎ ফেসবুক (facebook) পোস্ট ইয়াসিনের ছবি। সঙ্গে দাবি, হাওড়ার (howrah) ডোমজুড়ের হাসপাতালে তাঁর দেহ রয়েছে। মৎস্যজীবীর (fisherman) রহস্যমৃত্যুতে (mysterious death) অবশ্য খুনের (murder) অভিযোগ তুলছে পরিবার।


কী ঘটেছিল?
দিন আনি, দিন খাই সংসারের হাল ফেরাতে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিতেন কাকদ্বীপের হারুড পয়েন্ট কোস্টাল থানার মধুসূদনপুরের খান পাড়ার মৎস্যজীবী ইয়াসিন শেখ। ২৯ বছরের ওই যুবক 'FB বিশ্ব জয় ৩' নামে একটি ট্রলারেই সাধারণত মাছ ধরতে যেতেন। গত ২৭ জুলাই-ও ট্রলারে করে মাছ ধরতে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তাঁর। ইয়াসিনের পরিবার হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে। তার পরও কেটে গিয়েছে ১১ দিন। এর পর হঠাতই একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। পরিবারের দাবি, ওই পোস্টে ইয়াসিনের দেহ দেখিয়ে বলা হয়েছিল হাওড়ার ডোমজুড়ের হাসপাতালে রয়েছে সেটি। কিন্তু কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীর দেহ হাওড়ার ডোমজুড়ে গেল কী ভাবে? আপাতত এই নিয়েই ঘনীভূত হয়েছে রহস্য।


খুনের দাবি পরিবারের...
মৎস্যজীবীর পরিবারের দাবি, ইয়াসিনকে খুন করা হয়েছে। এ নিয়ে  'FB বিশ্ব জয় ৩'ট্রলারে মাঝির দিকে আঙুল তুলেছেন ইয়াসিনের স্ত্রী। তাঁর দাবি, অতীতেও বেশ কয়েক বার যুবককে প্রাণে মারার ছক কষেছিলেন ওই মাঝি। ইতিমধ্যে পরিবারের তরফ থেকে হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইয়াসিনের পরিজনদের দাবি একটাই। এই ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ব্যবস্থা করুক পুলিশ। উল্লেখ্য,গত এপ্রিলে মাছ ব্যবসায়ীর খুনের ঘটনায় তোলপাড় পড়েছিল পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে। তাতে অভিযুক্ত সন্দেহে ৩২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টির প্রতিবাদে গলসি থানায় প্রায় ঘণ্টাখানেক তুমুল বিক্ষোভ দেখায় ধৃতদের পরিবার। সূত্রের খবর, মাছ ব্যবসায়ী উৎপল ঘোষ খুনে অভিযুক্ত প্রতিবেশী মনোজ ঘোষকে আগেই গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু এর পর অভিযুক্ত ও তাঁর দুই আত্মীয়ের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনায় আরও ৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরিস্থিতি একসময়ে এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে অশান্তি এড়াতে র‍্যাফ মোতায়েন করা হয়।
কিন্তু কাকদ্বীপের ঘটনায় মূল প্রশ্ন একটাই। ইয়াসিনের দেহ হাওড়ার ডোমজুড়ে গেল কী ভাবে? নিখোঁজ-রহস্যের সমাধানে বাধা দিতে কেউ কি তা ভেবেচিন্তেই পৌঁছে দিয়েছিল? নাকি পিছনে অন্য কোনও গল্প রয়েছে? জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে তরতাজা সদস্যকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান পরিবার, এলাকাতেও বিষণ্ণতার ছায়া।


আরও পড়ুন:মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে পুলিশের! বিস্ফোরক অভিযোগ শাসকদলের বিধায়কের