প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া : বোমাবাজির (Bombing) পুরনো মামলায় অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে বোমায় আক্রান্ত পুলিশ (Police) ! ঘটনাকে ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড নদিয়ার (Nadia) কালীগঞ্জে। পুলিশ সূত্রে দাবি, ওসি এবং সিভিক ভলান্টিয়ার মিলিয়ে মোট ৫ জন বোমায় জখম (Injured) হয়েছেন। গ্রেফতার (Arrested) ৩ অভিযুক্ত। পুলিশের ওপর হামলার পর সিপিএমের বিরুদ্ধে বাড়ি ভাঙচুর, বোমাবাজি ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করেছে তৃণমূল। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম (CPIM)।
নদিয়ার কালীগঞ্জে আক্রান্ত পুলিশ
গভীর রাতে দাউদাউ করে জ্বলছে বাড়ি। তার সঙ্গে ঘন ধোঁয়ায় ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ। সকালেও রাস্তায় পড়ে সকেট বোমার খোল। পুলিশের বেতের লাঠি। আর ধারাল অস্ত্র। সোমবার রাতে তুলকালামের চিহ্ন রয়েছে মঙ্গলবারও। নদিয়ার কালীগঞ্জে আক্রান্ত পুলিশ। বোমাবাজির মামলায় অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে বোমার মুখে পড়লেন পুলিশকর্মীরা। ওসি, ৩ জন সিভিক ভলান্টিয়ার এবং গাড়িচালক-সহ মোট ৫ জন জখম হয়েছেন এই ঘটনায়। গোটা ঘটনার জেরে এখনও থমথমে কালীগঞ্জের মোলান্দি গ্রাম। কালীগঞ্জের মোলান্দি গ্রামের বাসিন্দা আসমা বিবি বলেছেন, 'আসামী ধরতে এসেছিল পুলিশ। আসামী ধরতে এসে ওদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়।'
কীভাবে ঘটনার সূত্রপাত ?
ঘটনার সূত্রপাত, সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ। পুলিশ সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতাকে বোমা ছোড়ার অভিযোগ সংক্রান্ত একবছরের পুরনো মামলায় সাদ্দাম শেখ নামে এক সিপিএম কর্মী-সহ কয়েকজনকে ধরতে সোমবার মোলান্দি গ্রামে যায় পুলিশ। অভিযুক্তরা সবাই পালিয়ে যায়। তারপরই পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি সৌরভ চট্টোপাধ্যায় ও এক সিভিক ভলান্টিয়ার বোমায় জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তৃণমূল শিবিরের অভিযোগ, বোমাবাজির জেরে পুলিশ পিছু হঠতেই, একদল সিপিএম সমর্থক এলাকায় তাণ্ডব চালায়। তৃণমূল সমর্থকদের বাড়িতে লুঠপাট, ভাঙচুরের পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক টানাপোড়েন। তৃণমূলের তরফে অভিযোগের তির সিপিএমের দিকে। পাল্টা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করেছে সিপিএম। কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, 'সিপিএমের লোকজন হামলা চালিয়েছে।' যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম। সিপিএম-এর নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস আচার্য বলেছেন, 'তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ওরাই বোমা মজুত করছে। ওখানে সিপিএমের কেউ নেই।'
কৃষ্ণনগর থেকে পুলিশ সুপার ঈশানী পালের নেতৃত্বে রাতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তারপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অশান্তি এড়াতে এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। পুলিশের গাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ব্যক্তি-আক্রমণ নয়, লড়াই হবে রাজনৈতিক, কৌস্তভকে বার্তা অধীরের