সুজিত মণ্ডল, নদিয়া:  ডাক্তার-বৈদ্য ডেকে নয়, আঙুল ঢুকিয়ে নিজেই মাথা থেকে গুলি বার করে আনেন সহদেব মণ্ডল। খোলসা করলেন নদিয়ার হাঁসখালিতে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল (TMC) নেতার পরিবার। তাঁরা জানিয়েছেন, মাথায় গুলি লাগলে প্রাথমিক ধাক্কা না সামলাতে না পেরে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সহদেব (TMC Leader Shot)। মোটর সাইকেলটি এসে পড়ে তাঁর শরীরে উপর। সেই অবস্থাতেই উঠে বাড়ির দিকে দৌড় লাগান তিনি। আৎ দৌড়তে দৌড়তেই আঙুল ঢুকিয়ে মাথার পিছন থেকে বার করে আনেন গেঁথে থাকা গুলি। সঙ্কটজনক অবস্থায় এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।


রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে প্রথমে তৃণমূল নেতার হত্যা এবং তার পর জীবন্ত অবস্থায় আট জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে উত্তাল গোটা রাজ্য। সেই পরিস্থিতিতেই বুধবার নদিয়ার (Nadia News) হাঁসখালির (Hanskhali News) বগুলায় গুলিবিদ্ধ হন সহদেব। তিনি বগুলা ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অনিমা মণ্ডলের স্বামী। বুধবার রাতে বগুলা বাজার থেকে মোটর সাইকেলে চেপে ফিরছিলেন তিনি। সেই সময় রাস্তায় আগে থেকেই তিন-চার জনের একটি দল ওতপেতে ছিল বলে অভিযোগ। সহদেবের রাস্তা আটকে তারা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। সেই গুলি এসে লাগে সহদেবের মাথার পিছনে।


গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন সহদেব। মোটর সাইকেলটি এসে পড়ে তাঁর গায়ের উপর। সেটি ঠেলে সরিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই দৌড় লাগান সহদেব। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে ফের গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীর দল। কিন্তু সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বেরিয়ে যায়। কোনও রকমে সেই অবস্থায় গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়েন সহদেব। সেখানে তাঁকে দেখে ভিড় জমে যায় সাধারণ মানুষের। তড়িঘড়ি বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরে সেখান থেকে শক্তিনগর হাসপাতাল এবং শেষ মেশ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আনা হয়। এই মুহূর্তে কলকাতার হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন সহদেব। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।


আরও পড়ুন: Rampurhat Fire: দরজা ভেঙে ঢুকে প্রথমে মারধর, তার পর জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়, সিলমোহর ময়নাতদন্তের রিপোর্টের


এই গোটা ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি নেতা সুব্রত বিশ্বাসের হাত রয়েছে বলে দাবি সহদেবের পরিবারের। তাঁদের দাবি, বিজেপি নেতা বছরখানেক ধরে হুমকি দিচ্ছিলেন। দু’ পক্ষের মারামারিও হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না অভিযুক্ত বিজেপি নেতার। গেরুয়া শিবির অবশ্য হামলা-যোগ অস্বীকার করেছে। রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিজেপি বিধায়ক অসীম বিশ্বাসের দাবি, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন সহদেব। তৃণমূলের লোকেরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।