আবির দত্ত, কালীগঞ্জ : কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে 'আঙুল বিতর্ক'। ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে মধ্যমা দেখিয়ে বিতর্কে বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ। দেবগ্রামের অন্নপূর্ণা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৭৩ নম্বর বুথে ভোট দিতে যান বিজেপি প্রার্থী। ভোটদানের পর বেরিয়ে এসে মধ্যমা দেখান বিজেপি প্রার্থী। ফাঁসিয়েছেন নির্বাচনী আধিকারিক, অভিযোগ আশিস ঘোষের। পরিকল্পনামাফিক এই আঙুলে কালি লাগিয়েছেন, দাবি বিজেপি প্রার্থীর। অভিযোগ পেয়ে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট চাইল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। গোটা বিতর্কে বিজেপিকে নিশানা তৃণমূলের। 'নির্বাচনের পরে বিজেপি বরাবরই মানুষকে এই আঙুলটাই দেখিয়ে আসছেন। এই প্রথম নির্বাচন শুরু হতেই তাঁদের আসল প্রবৃত্তি বেরিয়ে এল', সোশাল মিডিয়ায় বিজেপি প্রার্থী ছবি পোস্ট করে খোঁচা দেবাংশু ভট্টাচার্যর। 

আজ সকাল থেকে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন আশিস ঘোষ। বুথে ঢোকার মুখে তাঁকে আটকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। দেবগ্রামের চাঁদঘর আদর্শ বিদ্যাপীঠের ৫৪ নম্বর বুথের ঘটনা। প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান আশিস ঘোষ। বিজেপি এজেন্টকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। প্রিসাইডিং অফিসারকে তৃণমূলের ক্যাডার বলে কটাক্ষ বিজেপি প্রার্থীর। প্রাথমিক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, দাবি প্রিসাইডিং অফিসারের। পরে বিজেপি প্রার্থীর এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়েছে, জানান প্রিসাইডিং অফিসার। সুষ্ঠুভাবে ভোট হতে না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে অশান্তি ছড়াচ্ছে তৃণমূল, অভিযোগ কালীগঞ্জের বিজেপি প্রার্থীর। 

একটিই বিধানসভায় উপনির্বাচন। আর সেখানেই বারবার বিতর্কে জড়াচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ। এবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে 'মধ্যমা' দেখিয়ে আঙুল বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। আশিস ঘোষের দাবি, প্রথমে আঙুলে কালি লাগানো হয়নি। এটাও পরিকল্পনা। পরে তিনি আবার গেলে আঙুলে কালি লাগানো হয়েছে। কিন্তু সঠিক আঙুলে কালি লাগানো হয়নি। এটাও পরিকল্পনা। গোটা বিষয়টাই রাজনৈতিক কারণে হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। বিজেপি প্রার্থীর কথায়, 'তৃণমূল এটাকে নিয়ে হাইলাইট করবে। পুরোটাই পরিকল্পনা করে করা হয়েছে।' প্রিসাইডিং অফিসারদের দিকেই অভিযোগ তির ছুড়েছেন তিনি। প্রিসাইডিং অফিসাররা দায়িত্ব পালন করেনি বলেও দাবি করেছেন এই বিজেপি প্রার্থী। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। 

দেবগ্রাম অঞ্চলে ১৭৩ নম্বর বুথে ভোট দেন আশিস ঘোষ। পাশেই ১৮০ নম্বর বুথের কাছে এসে হাত তুলে দেখান যে তিনি ভোট দিয়েছেন। তখনই দেখা যায় তিনি 'মধ্যমা' দেখাচ্ছেন। কিন্তু এর আগে দেখা গিয়েছে, তিনি যখন প্রথমে আঙুল দেখাতে গিয়েছিলেন তখন দেখা যায় আঙুলে কালি ছিল না। ফের তিনি যান এবং পরে যখন হাত দেখান তখন 'মধ্যমা' দেখান যেখানে কালি লাগানো ছিল। নিয়ম অনুসারে ভোট দেওয়ার আগে ভোটদাতার ইনডেক্স ফিঙ্গার বা তর্জনীতে কালি লাগানো হয়। তবে এখানে তা হয়নি এবং সেটা পরিকল্পনা করে করা হয়েছে বলেই অভিযোগ বিজেপি প্রার্থীর। তৃণমূলের তরফে এই ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। দানা বেঁধেছে বিতর্ক। রিপোর্ট তলব করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে। তবে ইনডেক্স ফিঙ্গারে কালি না দিয়ে অন্য আঙুলে দিলে যে সাংঘাতিক ভাবে নিয়ম লঙ্ঘন হয় বা অসুবিধা হয় তা কিন্তু নয়, এমন কিছুই জানায়নি নির্বাচন কমিশন।