সুজিত মণ্ডল, নদিয়া : সম্প্রতি বাংলার মা, মেয়েরা আজীবন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতা পাবেন বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর স্বামীহারা মহিলারা পেয়ে থাকেন বিধবা ভাতা। অথচ শান্তিপুরের বাসিন্দা শেফালি দে স্বামী জীবীত থাকাকালীনই নিয়মিত পান বিধবা ভাতা। এমনি এমনি নয়, এই ভাতা আদায় করতে তাঁকে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বলে দাবি মহিলার। এর জন্য রীতিমতো কাটমানিও দিতে হয়েছে তাঁকে। 


শান্তিপুরের বাসিন্দা শেফালি দের স্বামী জীবিত, অথচ ২ বছর ধরে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন তিনি । এর জন্য এক তৃণমূল কর্মীকে ৩ হাজার টাকা কাটমানি দিতে হয়েছে বলে এখন অভিযোগ করছেন তিনি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেখানে সব মেয়েদেরই লক্ষ্মীভাণ্ডার দিয়ে থাকে, সেখানে স্বামী থাকতে বিধবা ভাতার জন্য এত মরিয়া হয়ে উঠলেন কেন শেফালি দে? মহিলার দাবি, আবেদন করেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার না পাওয়ার বিষয়টি তৃণমূল কর্মীকে জানালে তিনি ৩ হাজার টাকা কাটমানির বিনিময়ে মাসে এক হাজার টাকা ভাতার ব্যবস্থা করে দেন।


আইনি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মহিলার দাবি, ওই টাকা যে বিধবা ভাতার তা তিনি জানতেন না। অর্থের বিনিময়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে দাবি করেছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। তবে ফর্ম ফিল আপ করিয়েছিলেন বিধবা ভাতার। তা তিনি জানতেন না।  তাঁর দাবি, দু’দফা য়তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল মোট ৩ হাজার টাকা। মহিলা জানিয়েছেন,  তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা উত্তম হালদার তাঁকে বাড়িতে জিজ্ঞাসা এসে খোঁজ নিয়েছিলেন, , তিনি লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাচ্ছেন কিনা। তিনি দুইবার আবেদন জানিয়েও পাননি,  সেই বিষয়টি ওই তৃণমূল নেতাকে জানান। এরপর একদিন ফর্ম ফিলাপ করে ওই নেতাই তা জমা করে দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের পর টাকা ঢুকতে শুরু করে ওই মহিলার অ্যাকাউন্টে। 


বিষয়টি জানতে পেরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শান্তিপুরের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সন্দীপ ঘোষ । তিনি বলেন, কোনও কারণে ওই মহিলার টাকা ঢোকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন তিনি অভিযোগ গিয়েছিলেন তাঁর কাছে। একজন সধবা মহিলাকে বিধবা ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ জানাতে দেখে তিনি সন্দেহ করেন, নিশ্চয়ই এর মধ্যে গণ্ডগোল আছে !


কীভাবে এই জালিয়াতি ? খোদ বিডিও দাবি করেছেন, করোনা পর্বের সময়ে এই ধরনের কাজ একাধিক ঘটেছে। তখন থার্ড পার্টি দিয়ে এই সমস্ত আবেদন এন্ট্রি করানো হতো। তখন একটি চক্র সক্রিয় ছিল যাদের মাধ্যমে এই ধরনের কাজ হয়ে থাকতে পারে। তিনি সবদিক খতিয়ে দেখার পর থানায় অভিযোগ করেছেন বলে জানান। 


বিজেপির অভিযোগ, কাটমানি নিয়ে জনমুখী প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করছে তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।  


আরও পড়ুন :  গায়ক চরণ দাসের জেল যাত্রা টেনে কোর্টে ধমক খেলেন কুন্তল ! নিয়োগ দুর্নীতিতে ৫২ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন