প্রদ্যোৎ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, শক্তিনগর (নদিয়া) : আরজি কর-কাণ্ডের আবহে সরকারি হাসপাতালের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন যখন এখনও চলছে, তখন নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল চত্বরে ধরা পড়ল মদ্য়পানের ছবি ! আর এই খবর করতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়লেন সাংবাদিকরা ! ঘটনায় দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 


আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় রাজ্য এখনও উত্তাল। সরকারি মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তার মধ্য়েই নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল চত্বরে মদ্যপানের অভিযোগ।

শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে পূর্ত বিভাগের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অফিস। অভিযোগ, মঙ্গলবার বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সেই অফিসের একটি ঘরেই বসেছিল মদ্যপানের আসর। যে ঘরে এই মদ্যপান চলছিল বলে অভিযোগ, তার পাশেই রয়েছে নার্সিং ট্রেনিং স্কুল ও নার্সিং হস্টেল। সেখানে পৌঁছলে কার্যত হুমকির মুখে পড়তে হয় সাংবাদিকদের। উভয়পক্ষের কথোপকথন হয় এভাবে...



  • সাংবাদিক-এটা তো হাসপাতাল। এখানে কী হচ্ছে?

  • পূর্ত দফতরের ঠিকা কর্মী- কী হচ্ছে, আপনারা কে?

  • সাংবাদিক- আমরা যেই হই না কেন, কী হচ্ছে এখানে বলুন। হাসপাতালের মধ্যে কী হচ্ছে আপনি বলুন।

  • পূর্ত দফতরের ঠিকা কর্মী- না হাসপাতালে না...

  • সাংবাদিক- আমাদের কাছে খবর আছে হাসপাতালে কী হচ্ছে।

  • পূর্ত দফতরের আধিকারিক- কী হচ্ছে না হচ্ছে...

  • সাংবাদিক- মদ্যপান চলছে।

  • পূর্ত দফতরের ঠিকা কর্মী- আপনারা এখানে এসেছেন। আপনারা কে?

  • সাংবাদিক- আমরা রিপোর্টার।

  • পূর্ত দফতরের ঠিকা কর্মী- আপনি নামুন। এখানে ঢোকার অনুমতি কে দিয়েছে ?

  • সাংবাদিক- আপনাদের এখানে চলছে যেটা...

  • পূর্ত দফতরের ঠিকা কর্মী- আপনাদের এখানে যে কোনও, এটা সরকারি বিল্ডিং, এখানে ঢোকার অনুমতি কে দিয়েছে ? 

  • সাংবাদিক- ক্যামেরায় হাত দেবেন না।

  • পূর্ত দফতরের ঠিকা কর্মী- নীচে নামুন আপনার। আমি যে-ই হই....

    কোতোয়ালি থানার পুলিশ এসে পূর্ত দফতরের দুই ঠিকা শ্রমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

    শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, "ক্যাম্পাসের মধ্যে কিছু লোক ঢুকেছে এইরকম কিছু খবর পুলিশ দিয়েছে। আমরা পুলিশকে বলেছি আপাতত যে বা যারা থাকুক এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, পুলিশকে আমরা বলেছি, তাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করে বা আইনানুগ ব্যবস্থা যাতে নেয়।"

    সুরক্ষা বিতর্কের মধ্য়েই সরকারি হাসপাতাল চত্বরের এই ছবি উদ্বেগের। ধৃতদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য় ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। তাদের আদালতে তোলা হলে দু'জনকেই জামিন দিয়ে দেন বিচারক।