কৃষ্ণনগর : এ যেন উলটপুরাণ ! দিকে দিকে যখন পঞ্চায়েতে বোর্ড (Panchayat Board) গঠনের আগে অন্য দল থেকে তৃণমূলে নাম লেখানোর হিড়িক পড়ে গেছে, সেই সময় কৃষ্ণনগরে (Krishnanagar) দেখা গেল অন্য ছবি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও তৃণমূলের হাতছাড়া হল গ্রাম পঞ্চায়েত। তৃণমূলের হাত থেকে পঞ্চায়েতের দখল ছিনিয়ে নিল বিজেপি-সিপিএম জোট। কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের রুইপুকুর পঞ্চায়েতের দখল ছিনিয়ে নিল বিজেপি-সিপিএম জোট।


২২টি আসনের রুইপুকুর পঞ্চায়েতে (Panchayat) ১৩টি আসনে জিতেছিল তৃণমূল, বিজোপি ৭টি ও সিপিএম ২টি আসনে জয়লাভ করে। তৃণমূলের একজন সদস্যের মৃত্যু হওয়ায় সদস্যসংখ্যা কমে হয় ১২। ফলে, সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল তৃণমূলই। কিন্তু, আজ ভোটাভুটির সময় তৃণমূলের ২ জন এবং সিপিএম-এর ২ জন বিজেপি-কে সমর্থন করে। ফলে, তৃণমূলের পক্ষে ভোট পড়ে ১০টি, বিরোধী পক্ষে ভোট পড়ে ১১টি। ফলে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও তৃণমূলের হাত থেকে বোর্ড ছিনিয়ে নিল বিজেপি-সিপিএম জোট।


পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের আগে রাজ্যজুড়ে ফেরে দলবদলের হিড়িক দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ জায়গাতেই বিরোধী দল থেকে তৃণমূলে নাম লেখাচ্ছেন জয়ী প্রার্থীরা। শাসকশিবিরে নাম লেখানোর পর সেইসব প্রার্থী উন্নয়নে সামিল হওয়ার জন্য দলবদল বলে দাবি করলেও, বিরোধীদের দাবি, কোথাও ভয় দেখিয়ে আবার কোথাও প্রলোভন দেখিয়ে দলবদল করাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসকশিবির। 


এদিনও রাজ্যের একাধিক পঞ্চায়েত থেকে দলবদলের খবর সামনে এসেছে। যেমন- যোগদান করিয়ে পুরুলিয়ায় ফের আরও ২টি ত্রিশঙ্কু গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে তৃণমূল। জয়পুর ব্লকের ঘাঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী ফরওয়ার্ড ব্লক ও নির্দল প্রার্থী বোর্ড গঠনের আগে নাম লেখান শাসকদলে। ফলে কার্যত নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ঘাঘরা পঞ্চায়েতের দখল নিতে যাচ্ছে তৃণমূল। অন্যদিকে, পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের ডিমডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস ২টি আসন পায়। সেই দুই জয়ী প্রার্থীই যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এর ফলে ২০ আসনের গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল দখল করল ১২টি আসন।


পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের আগে ফের দলবদল পূর্ব মেদিনীপুরেও। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ভোগপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ জয়ী প্রার্থী। ভোগপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৫। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ১০টি আসন। কংগ্রেস ছেড়ে ২ প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শাসক দলের শক্তি বেড়ে হল ১২। ফলে, ম্যাজিক ফিগার থেকে মাত্র ১ টি আসন দূরে রইল তৃণমূল।