প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: কয়েকশো বছরের পুরনো কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো (Krishnagar Rajbari Durga Puja)। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের আমলের অনেক আগে থেকেই এই পুজো হয়ে আসছে। তবে তাঁর আমলে এই পুজো সর্বজনীন রূপ নেয়। মহালয়ার দিন যজ্ঞের মধ্যে দিয়ে পুজোর সূচনা হয়। প্রতিমা এখানে দুর্গা নয়, পরিচিত রাজ রাজেশ্বরী নামে। মায়ের বাহন সিংহের মুখ তৈরি করা হয় ঘোড়ার আদলে।
আজ মহা অষ্টমী। সকাল থেকেই পুজো মণ্ডপগুলিতে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য ভিড়। পাশাপাশি আজ কুমারীপুজোও হচ্ছে কলকাতা-সহ রাজ্যের জেলায় জেলায়। বেলুড় মঠে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে কুমারীপুজো। এরপর মণ্ডপে মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, মাইকে স্তোত্রপাঠ৷ তাই শুনে শুনেই কারও বা মনে মনেই অঞ্জলি দেওয়া৷ দুপুর পেরোলেই সন্ধিপুজো। অষ্টমী পেরিয়ে নবমীতে প্রবেশ। হাতে আর মাত্র ২দিন৷ তাই উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম-সর্বত্রই উত্সবের আনন্দের ঢেউয়ে গা ভাসাতে তৈরি সবাই।
বেলা বাড়তেই সঙ্গে সঙ্গেই মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়বে রঙিন জামা-কাপড়ে সাজা মানুষের ভিড়। বড়দের হাত ধরে ভিড়ের মাঝে কচি-কাঁচারাও৷ শুধু তো ঠাকুর দেখা নয় সঙ্গে দেদার আড্ডা, খাওয়া দাওয়া৷ নবমী নিশি ফুরোলেই তো পুজো শেষ। তাই মন খারাপ করা নবমীর আগে উত্সবের সুরে ভাসতে তৈরি তিলোত্তমা৷ গত দু’বছর করোনার কারণে বন্ধ থাকলেও, এবছর ফের কুমারী পুজো হচ্ছে জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনে। প্রথা মেনে আজ ঠিক সকাল ৯টায় কুমারী পুজো শুরু হয়। তবে এবার দর্শকদের সামনে বসতে দেওয়া হচ্ছে না। দূর থেকেই কুমারী পুজো দেখবেন দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি আশ্রম চত্বরে কোভিড বিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কুমারী পুজো হচ্ছে এদিন বাগবাজারেও।
শোভাবাজার রাজবাড়িতেও এদিন অষ্টমীর পুজো হয়। এবার ২৬৬ বছরে পা দিল শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। পৌরাণিক ও বেদ মতে এখানে পূজিত হন মা দুর্গা । রীতি মেনে আজ সকালে দেবীর মহাস্নান হয়। তারপর শুরু হয়েছে অষ্টমীপুজো। শোভাবাজার রাজবাড়িতে জড়ো হয়েছেন আত্মীয়-পরিজনেরা৷ অষ্টমী পুজোর পাশাপাশি, শোভাবাজার রাজ পরিবারে চলছে ভোগরান্নার প্রস্তুতিও৷ অপরদিকে ১০৪ বছরে পা দিল বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো।
আরও পড়ুন, পাড়ার পুজো বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নারে অঞ্জলি দিলেন সৌরভ, সঙ্গী দাদা স্নেহাশিসও
বর্তমান থিমের জোয়ারে গা না ভাসিয়ে, বরাবরই সাবেকিয়ানাকেই সঙ্গী করে তারা। এবারও সাবেকি প্রতিমায় ডাকের সাজ বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোয়। উত্তর কলকাতার এই পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে ইতিহাস। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই পুজোর সূচনা।নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, নলিনীরঞ্জন সরকার-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন।