বিটন চক্রবর্তী,পূর্ব মেদিনীপুর: প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো (Mahishadal Rajbari Durgapuja)) । ১৭৭৮ সালে মহিষাদলের রানি জানকীদেবীর আমলে মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয়। বনেদিয়ানায় পুজোর জৌলুশ কমলেও এখনও তা হয়ে আসছে রীতিনীতি মেনেই।এখানে প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর আচার। আগে তিথি অনুযায়ী, অর্থাত্ সপ্তমীতে সাতমন, অষ্টমীতে (Astami) আটমন চালের ভোগ নিবেদন করা হত। সন্ধিপুজোয় কামান দাগার রেওয়াজ থাকলেও এখন তা বন্ধ। পুজো দেখার পাশাপাশি এবার রাজবাড়িতে থাকার ব্যাবস্থাও করা হয়েছে মহিষাদল রাজবাড়ির তরফে।
আজ মহা অষ্টমী। সকাল থেকেই পুজো মণ্ডপগুলিতে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য ভিড়। পাশাপাশি আজ কুমারীপুজোও হচ্ছে কলকাতা-সহ রাজ্যের জেলায় জেলায়। বেলুড় মঠে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে কুমারীপুজো। এরপর মণ্ডপে মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, মাইকে স্তোত্রপাঠ৷ তাই শুনে শুনেই কারও বা মনে মনেই অঞ্জলি দেওয়া৷ দুপুর পেরোলেই সন্ধিপুজো। অষ্টমী পেরিয়ে নবমীতে প্রবেশ। হাতে আর মাত্র ২দিন৷ তাই উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম-সর্বত্রই উত্সবের আনন্দের ঢেউয়ে গা ভাসাতে তৈরি সবাই। বেলা বাড়তেই সঙ্গে সঙ্গেই মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়বে রঙিন জামা-কাপড়ে সাজা মানুষের ভিড়। বড়দের হাত ধরে ভিড়ের মাঝে কচি-কাঁচারাও৷ শুধু তো ঠাকুর দেখা নয় সঙ্গে দেদার আড্ডা, খাওয়া দাওয়া৷ নবমী নিশি ফুরোলেই তো পুজো শেষ। তাই মন খারাপ করা নবমীর আগে উত্সবের সুরে ভাসতে তৈরি তিলোত্তমা৷ গত দু’বছর করোনার কারণে বন্ধ থাকলেও, এবছর ফের কুমারী পুজো হচ্ছে জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনে। প্রথা মেনে আজ ঠিক সকাল ৯টায় কুমারী পুজো শুরু হয়। তবে এবার দর্শকদের সামনে বসতে দেওয়া হচ্ছে না। দূর থেকেই কুমারী পুজো দেখবেন দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি আশ্রম চত্বরে কোভিড বিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কুমারী পুজো হচ্ছে এদিন বাগবাজারেও।
আরও পড়ুন, পুজোয় ঢাক বাজিয়ে আসর মাতালেন লকেট-রাজ চক্রবর্তীরা
কলকাতায় ইতিমধ্যেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ভিড়। দিনভর ঠাকুর দেখা শুরু, যদি কোনও সেরা পুজো বাদ পড়ে যায়, তাই স্কুলের কচিকাচারা কোনও পুজোই বাদ দিতে চান না। তার উপর আবার হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ মহাঅষ্টমীর পুজোতেও বৃষ্টির আশঙ্কা। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল হাওয়া অফিস। যার জেরে সপ্তমী থেকে উপকূলের জেলাগুলিতে বৃষ্টি বেড়েছে। দশমী পর্যন্ত বৃষ্টি থামার সম্ভাবনা নেই। জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সুতরাং পুজো দেখতে পরিবারকে নিয়ে বেরোলে অবশ্যই ছাতা সঙ্গে রাখুন। সাবধানে দেখুন পুজো। তবে পাশাপাশি, কোভিড মুক্ত থাকতে ভিড এড়িয়ে চলুন। স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখুন। বাড়ি ফিরে দেরি করে শুলেও আলস্যে মশারি টানাতে ভূলবেন না। পুজোর কদিন যতোটা পারবেন, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন। শরীরের ইমিউনিটি ঠিক থাকবে। ওয়াদর চেঞ্জের সময় ঠান্ডা লাগবে না। আপনি তাহলে পুরোপুরি কোভিড মুক্ত থাকতে পারবেন।
কলকাতার পুজোর নির্ঘণ্ট দেখুন একনজরে
মহালয়া ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার
মহাপঞ্চমী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার
মহাষষ্ঠী ১ অক্টোবর ২০২২ শনিবার
মহাসপ্তমী ২ অক্টোবর ২০২২ রবিবার
মহাঅষ্টমী ৩ অক্টোবর ২০২২ সোমবার
মহানবমী ৪ অক্টোবর ২০২২ মঙ্গলবার
মহাদশমী ৫ অক্টোবর ২০২২ বুধবার
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো ৯ অক্টোবর ২০২২, রবিবার