সুজিত মণ্ডল, কল্যাণী: পূর্ব বর্ধমানের পর এবার কল্যাণী। জেএনএম হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে আগুন। এদিন রাত পৌনে নটা নাগাদ হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে আগুন লাগে। আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন একজন রোগী। আগুন লাগার পরেই তড়িঘড়ি বের করে আনা হয় রোগীকে। কীভাবে ফের হাসপাতালে আগুন? এখনও ধোঁয়াশা।
ঘটনাস্থলে দমকলের দুটি ইঞ্জিন পৌঁছে যায়। সাময়িকভাবে কিছুটা ব্যাহত হয়েছে পরিষেবা। বন্ধ জরুরি পরিষেবাও। প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎহীন হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সহ একাংশ। পরে অবশ্য বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। এবিষয়ে হাসপাতালের সুপার জানান, "আইসোলেশন ওয়ার্ডে একজনই রোগী ছিলেন। ধোঁয়া দেখতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনই বলা যাচ্ছে না কীভাবে আগুল লাগল। অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন। সুরক্ষার্থে একটা অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।''
এর আগে গত মাসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Burdwan Medical College Hospital) কোভিড ওয়ার্ডে (Covid19 Ward) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শনিবার কাকভোরে ওয়ার্ডের মধ্যেই ঝলসে মৃত্যু হয় পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) গলসির বড়মুড়িয়ার বাসিন্দা সন্ধ্যা মণ্ডলের। সূত্রের খবর, রোগিণী লাইটার দিয়ে মশা মারার ধূপ জ্বালানোর সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ স্টেট ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি (State Forensic Laboratory) থেকে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্য দফতরের তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দলের রিপোর্ট আজই জমা দেয় বলে সূত্রের খবর। কীভাবে লাগল আগুন? তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠকে শুরু করে।
আগেই বর্ধমান হাসপাতালে (Burdwan Medical College Hospital) পৌঁছয় স্বাস্থ্য দফতরের (West Bengal Health Department) ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম (Fact finding team)। কোভিড ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর, স্বাস্থ্য ভবনে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট দিয়েছে তদন্তকারী দল। স্বাস্থ্য ভবন (Swastha Bhawan) সূত্রে জানা যায়, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, “CCTV ফুটেজ ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক ঘটনার প্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে, অসাবধানতায় আগুন ধরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে। আগুন জ্বালাতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। কোভিড ওয়ার্ডে যন্ত্রাংশ বা বৈদ্যুতিক বিভ্রাটে আগুন লাগেনি।‘’ রিপোর্টে বলা হয়েছিল, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন সন্ধ্যা মণ্ডল। সম্ভবত ওই অক্সিজেন মাস্ক খুলে রোগিণী লাইটার দিয়ে মশা মারার ধূপ জ্বালানোর সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। উদ্ধার হয়েছে লাইটার। রোগিণীর বেডেই সীমাবদ্ধ ছিল আগুন। কিন্তু কীভাবে তাঁর কাছে লাইটার এল? সেই প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে মৃতার পরিবার।
আরও পড়ুন: Jhargram: লোকালয়ে ঢুকে হাতির তুমুল তাণ্ডব, আতঙ্কে কাঁপছে এলাকাবাসী