প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ শিবিরে খারাপ রাস্তা নিয়ে অভিযোগ জানাতেই মেজাজ হারালেন মন্ত্রী। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন করলেন, এতদিন কোন দল করেছ? গতকালের ঘটনার ভিডিও ভাইরা হয়েছে। নদিয়ার কোতোয়ালি থানা এলাকার চর শম্ভুনগরে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ শিবিরে খারাপ রাস্তা নিয়ে মন্ত্রী ও কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাসের কাছে অভিযোগ জানান গ্রামবাসীরা। তাতেই চটে যান মন্ত্রী। 

কর্মসূচির নাম 'আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান' অথচ সমাধান চাইতে গিয়েই জুটল মন্ত্রীর ধমক। মেজাজ হারিয়ে কার্যত তেড়ে এলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। নদিয়ার কোতোয়ালির চড়শমভুনগর এলাকার এই এক কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বর্ষায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই রাস্তা তৈরির দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবিরে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। নিয়ম অনুযায়ী, যে কাজ আগে করা প্রয়োজন বলে অধিকাংশ স্থানীয় বাসিন্দা মনে করছেন, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেই কাজের তালিকা বাইরে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে শিবিরে আসেন রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং কৃষ্ণনগর দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস। কিন্তু অভিযোগ, ওই রাস্তা তৈরি নিয়ে আপত্তি জানান মন্ত্রী। তা নিয়েই স্থানীয়দের সঙ্গে তুমুল বাগবিতন্ডা বেঁধে যায়। কোতোয়ালির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানতে চান,  "এতদিনের মধ্যে আমাদের রাস্তাটা কারও চোখে পড়ল না? আজকে দিয়েছি বলে চোখে পড়ছে লোকের?'' আর তাতেই পাল্টা মন্ত্রী জানতে চান, 'এতদিন ধরে কোন দল করেছ? কোন দল করেছ?' আরেক বাসিন্দা পরিতোষ জোয়ারদারল বলেন, "নিশ্চয়ই পদ্মফুলে ভোট দিয়েছ, সেই জন্যই তোমাদের রাস্তাটা হয়নি। তৃণমূল থাকতে আমাদের এই রাস্তা হবে না। একদম পরিষ্কার বলেছে এবং শুধু উনি (মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস) বলেননি, আমাদের রুইপুকুর পঞ্চায়েতের প্রধান অনুপ বিশ্বাসও বলেছে।'' রাস্তার দাবিতে বিক্ষোভ দেখানোয় সরাসরি বিজেপি বলে দাগিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানও। এর আগে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বেগমপুর-বিবিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। 'আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান' শিবিরে হাতাহাতি পর্যন্ত বেঁধে গিয়েছিল। সমস্যার কথা জানাতে গেলে তৃণমূলের সমর্থকরা মারধর করেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন পঞ্চায়েতের ISF সদস্য়। এবার নদিয়ায় রাস্তা চাওয়ায় মেজাজ হারিয়ে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলেন মন্ত্রী। চাপে পড়ে কার্যত সাফাইয়ের সুর শোনা গেল মন্ত্রীর গলায়। উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, "ওখানে যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমায় গ্রামে ডেকেছিল গেছিলাম। এই রাস্তাটা করতে আরও সময় লাগবে বুঝিয়েছিলাম। তার পরও ক্ষোভ প্রকাশ করে। তখন আমি বলি আপনারা তো আগে আমাদের ভোট দেননি। আমাকে এতটা রাস্তা হাঁটতে বলেছিল, জোরজারি করেছিল। আমি অর্ধেক হেঁটেছিলাম। তাই বলেছিলাম এই কথা।''