প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: তেহট্টের (Tehatta) বিধায়ক তাপস সাহার (Tapas Saha) বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের দিনই বড়সড় ভাঙন শাসকদলে। মঙ্গলবার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আর এদিনই বড়সড় ভাঙন তেহট্টের তৃণমূলে (TMC)।


তেহট্টে তৃণমূলে ভাঙন: তৃণমূল ছেড়ে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিলেন তেহট্ট পঞ্চায়েতের উপপ্রধান চায়না মণ্ডল খাঁ সহ প্রায় ১০০ জন কর্মী। এছাড়াও নারায়ণপুর ২ অঞ্চলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি আলিকদর মণ্ডল ও করিমপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সহ শতাধিক তৃণমূল নেতা কর্মী কংগ্রেসে যোগদান করেন। এদিন তাঁদের হাতে জাতীয় কংগ্রেসের দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি অসীম সাহা। দলত্যাগীদের অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতিগ্রস্তদের দল, সৎ লোকদের জায়গা কোনো জায়গা নেই। সেই কারণে দল ত্যাগ করেছেন তাঁরা। 


নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের হাতে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারের ঠিক পরদিনই, আরও এক তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তের আওতায় এলেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগেরই তদন্ত করবে সিবিআই, নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখার হাত থেকে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার গেল সিবিআইয়ের হাতে। অবিলম্বে সিবিআইকে নথি হস্তান্তরের নির্দেশ দিল আদালত। দ্রুততার সঙ্গে সিবিআইকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।


সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দিতে গিয়ে বিচারপতি মান্থা বলেন, তাপস সাহা অভিযুক্ত হলেও, তাকে শুধুমাত্র সিআরপিসি-র ৪১(এ) ধারায় নোটিস পাঠিয়েই থেমে গেছে তদন্তকারীরা। স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত হবে এটাই আদালত প্রত্যাশা করে এবং মানুষ যেন সেটা বুঝতে পারে। একজন বিধায়কের বিরুদ্ধে রাজ্যের সংস্থা নিরপেক্ষভাবে করতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে মামলাকারীদের মনে সন্দেহ থেকেই যাবে একই অভিযোগে দুটি সংস্থা আলাদা আলাদা করে তদন্ত করলে, আলাদা আলাদা সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে। সেটা সত্য উদঘাটনের পথে বাধা হতে পারে। তাপস সাহার বিরুদ্ধে তদন্তের সময় কেন তদন্তকারী আধিকারিকের সক্রিয়তা কমে যায় সেটা স্পষ্ট নয়। নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরা দুর্দান্ত কাজ করেছেন। তদন্তকারী আধিকারিকের যোগ্যতা নিয়ে কোনও সংশয় আদালতের নেই। কিন্তু তারপরেই হঠাৎ করে থেমে গেছেন। কেন তাপস সাহাকে গ্রেফতার করা হল না সেটাও স্পষ্ট নয়। ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী কেন তাপস সাহার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারা দেওয়া হল না? রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। অভিযুক্তরা বেশিদিন বাইরে থাকলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করা ও তথ্য প্রমাণ নষ্ট করার সম্ভাবনা থাকে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি।


আরও পড়ুন: West Midnapore: 'একটা বুথেও স্থান দেবেন না' এবার বিরোধীদের 'ঝাঁটাপেটা' দাওয়াই তৃণমূল বিধায়কের