সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ২০১৪-র টেট পাশ প্রার্থীর তালিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারীর নাম। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দ্বারা সদ্য প্রকাশিত ২০১৪-র তালিকায় তিন বিরোধী নেতার নাম। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন আইনজীবীরা।


৮ বছর পরে ২০১৪-র টেটপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর-সহ তালিকা প্রকাশ করেছে পর্ষদ। আর সেই তালিকায় জ্বল জ্বল করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত শাহ, শুভেন্দু অধিকারীদের নাম! স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ। কাকতালীয়ভাবেই নামের মিল পাওয়া গেছে। চাকরিপ্রার্থীদের তথ্য দিয়ে দাবি করেছে পর্ষদ।


২০১৪-র প্রাথমিক টেটে কারা কত নম্বর পেয়েছেন? প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তালিকায় রয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। দেখা যাচ্ছে, সেই তালিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছেন ৯২, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্কোর ৯৮। তাঁদের টেক্কা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি! সুকান্ত মজুমদারের প্রাপ্ত নম্বর ৯০। তবে দিলীপ ঘোষ একটু পিছিয়ে। প্রাপ্ত নম্বর ৮৪! সেই তুলনায় ভাল ফল সুজন চক্রবর্তীর। ১ নম্বরের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া!


চমকাবেন না! হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের প্রাপ্ত নম্বরের অসম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করেছে পর্ষদ! তা নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই অবাক করা এই কাণ্ড সামনে এসেছে! রাজ্যের প্রথম সারির রাজনীতিবিদদের সঙ্গে একই নামে পরীক্ষার্থী থাকতেই পারেন! কিন্তু তালিকা বিতর্কের রেশ পৌঁছে গেছে হাইকোর্টের অন্দরে। এই বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মামলাকারীরা।


২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের তালিকায় এই সমস্ত নাম। সত্যিই ‘নেমসেক’ না অন্য কোনও রহস্য আছে তার মধ্যে? শুভেন্দু অধিকারীর গলায় এ নিয়ে আবার ঠাট্টার সুর। বলছেন,  অ্যাপয়েন্টমেন্ট কবে দেবে আমাকে? আমাকে অ্যাপয়েন্টমেন্টটা দিক। আর ওই হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে মমতা ব্যানার্জির বাড়ির পাশে কোনও স্কুলে আমাকে যেন পড়ানোর সুযোগ দেয়। ভূতদের ধরুন। মমতা ব্যানার্জির ভূতদের ধরুন। 


টেট উত্তীর্ণদের তালিকায় কোন মমতা-অভিষেক শুভেন্দু-সুকান্ত? এতদিন বিতর্ক চলছিল ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের প্রাপ্ত নম্বরের তালিকা প্রকাশ না করা নিয়ে। হাইকোর্টের নির্দেশে তালিকা প্রকাশ তো হল। কিন্তু, সেই তালিকায় বহু পরীক্ষার্থীর নাম না থাকায় দানা বাধে আরেক বিতর্ক। আর ২ দিন পরই লক্ষাধিক নামের তালিকার মধ্যে রাজ্যের প্রথম সারির নেতাদের নামে পরীক্ষার্থীর খোঁজ মেলায় বিতর্কের পরত আরও পুরু হল।


এ দিকে, ‘কতদিনে শেষ হবে সিবিআই তদন্ত?’ ফের প্রশ্ন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। পাশাপাশি আরও দুর্নীতির ইঙ্গিত তিনি পাচ্ছেন জানিয়ে তদন্তে লোক বাড়ানোর কথাও বলেছেন হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতি। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই ফের একবার সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে উষ্ণাপ্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও সেদিনই পরে তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ওপরই আস্থা রেখে বলেছিলেন, 'সিবিআই ম্যাজিক দেখাতে পারে।'


আরও পড়ুন- ‘লোক কোথায়? সিবিআইকে লোক বাড়াতে হবে’ বিস্ফোরক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়